Dr. Neem on Daraz
Victory Day

কলাপাড়ায় মানুষের স্বস্তি এখন পানি তালে, রপ্তানি হচ্ছে সারাদেশে


আগামী নিউজ | উপজেলা প্রতিনিধি, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২২, ০৪:১৯ পিএম
কলাপাড়ায় মানুষের স্বস্তি এখন পানি তালে, রপ্তানি হচ্ছে সারাদেশে

পটুয়াখালীঃ কলাপাড়ায় পল্লীবিদ্যুতের অসহনীয়-মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং ও ভ্যাপসা গরমে মানুষের একটু স্বস্তি এখন তালের শাঁস কিংবা পানি তাল, যা পছন্দ করেনা এমন মানুষ পাওয়া যায়না। তীব্র দাবদাহে এ পানি তালের কদর বেঁড়ে যায় আরো বেশী। মৌসুমি ফল আম-লিচুর পাশাপাশি দিনে দিনে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুষ্টিতে ভরা এ পানি তালের জনপ্রিয়তা। স্থানীয় মানুষের চাহিদা মিটিয়ে এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে হচ্ছে ফরমালিনমুক্ত এ তাল। আর এ ফল সরবরাহে গ্রাম থেকে গ্রাম ছুটে বেড়াচ্ছেন কলাপাড়ার গাছি ও পাইকাররা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেকে ডেকে পানি তাল সংগ্রহ করছেন তারা। আর তা দুর-দুরান্তে সরবরাহ করে বেশ ভালোই লাভের মুখ দেখছেন পাইকার ও সরবরাহকারীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কলাপাড়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারগুলোতে বসেছে পানি তালের হাঁট। বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে করে করে নিয়ে আসা হচ্ছে শত শত সবুজ-কালো রংয়ের কাঁচা তালের ছড়া।

স্থানীয় এক পানি তাল সংগ্রহকারী মালিক মো: ফয়সাল হোসেন জানায়, তিনি ছোট ফড়িয়াদের মাধ্যমে গ্রাম থেকে পানি তাল, কচি ডাব জাতীয়
বিভিন্ন ফল সংগ্রহ করে রপ্তানি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়। অন্তত ২০/৩০জন পাইকার রয়েছেন তার অধীনে। যারা গ্রাম-গঞ্জ থেকে তাল কিনে এনে পাইকারী বিক্রি করেন তার ঘরে। এসব পাইকারদের মাধ্যমে ফল সংগ্রহ করে প্রতিদিন হাজার হাজার তাল সরবরাহ করছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। বর্তমানে তীব্র তাপদাহে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ পানি তালের চাহিদা প্রচুর। ফরমালিনমুক্ত এই ফলটি কিনে খেতে দামের বিষয়ে তেমন আমলে নিচ্ছেননা ক্রেতারা। চাহিদার কমতি নেই। ৫ টাকা দরে তাল কিনে ৭/৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন আড়তঘর গুলোতে। রাজধানীসহ দেশের দূর-দূরান্তে পরিবহন খরচসহ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে। বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্যের শেষ পর্যন্ত এ পানি তাল সংগ্রহ করে রপ্তানি করবেন বলে জানান তিনি।

তাল সংগ্রহকারী আরেকজন মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে ১০০-১৫০ টাকা দরে তালের শত কিনে গাছির মাধ্যমে সংগ্রহ করে স্থানীয় আড়তদারদের ঘরে ৫টাকা দরে বিক্রি করছেন দুই মাস ধরে।

পাইকার জালার হাওলাদার জানান, শুরুতে তেমন লাভের মুখ না দেখলেও এখন বেশ ভালো ব্যবসা করছেন তিনি। প্রতিদিন সকালেই বেড়িয়ে পড়েন তাল সংগ্রহের জন্য। বিকেলের মধ্যে সংগ্রহ করে তাল বিক্রি করেন বিভিন্ন আড়তঘরে। গ্রামের রাস্তাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নতি হলে পানি তাল বিক্রি আরো জমবে এবং এ ব্যবসাটি আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে তিনি জানান।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানায়, পানি তাল অথবা তালের শাঁস স্থানীয় মানুষের চাহিদা মিটিয়ে কলাপাড়া থেকে
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে। এরফলে তালগাছিরা অনেক লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় কৃষকদের তালগাছ রোপনের বিষয়ে আরো উৎসাহ, উদ্যোগী ও উদ্বুদ্ধ করা হবে বলে তিনি জানান।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: চিনময় হালদার বলেন, পানি তালের শাঁসে ভিটামিন এ,বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে। যা গরমের সময় পানি তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে এবং একেবারে কচি পানি তালের শাঁসে রক্ত শূন্যতা দূর করাসহ চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়। তাই পানি তালে দৃশ্যত: কোন ক্ষতি নেই বরং খেলে অনেক অদৃশ্য রোগের উপশম হয়, বিশেষত: এই ভ্যাপসা গরমে এটি একটি স্বস্তির নি:শ্বাস বলা চল এবং পানি তাল মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী।

রাসেল কবির মুরাদ/এমবুইউ 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে