Dr. Neem on Daraz
Victory Day

৯ মাসের একাডেমিক ভবন ৩২ মাসেও শেষ হয়নি, গাছতলায় চলছে পাঠদান


আগামী নিউজ | উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২২, ১২:৩৪ পিএম
৯ মাসের একাডেমিক ভবন ৩২ মাসেও শেষ হয়নি, গাছতলায় চলছে পাঠদান

নীলফামারীঃ সৈয়দপুরে ৯ মাসে একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু ৩২ মাসে তা শেষ করা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের গাছতলায় চলছে পাঠদান। আর প্রাকৃতিক কাজ সারছে শিক্ষার্থীরা বাঁশঝাড়ে। এমনটি ঘটেছে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আইসঢাল খিয়ারপাড়া আলিম এন্ড ভোকেশনাল মাদ্রাসায়।

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওলানা আফজাল বিন নাজির জানান, সাতটি শ্রেণী কক্ষের পুরাতন আধাপাকা ভবন ভেঙ্গে সেখানে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন। বহুতল ভবনের ভিত্তি দেয়া এ একাডেমিক ভবনের একতলা নির্মাণ করতে সরকার প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করেছিল ৮৫ লাখ টাকা। দিনাজপুরের বালুবাড়ীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিরাজ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. কামরুজ্জামান ভবন নির্মানে চুক্তি করে ৮০ লাখ ৭৫ হাজার টাকায়। সরকারের পক্ষে ভবন নির্মাণ বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। নির্মাণ কাজ শুরুর সময়ে মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের বিষয়টি সে সময়ে মুখ্য ছিল না। কিন্তু গত ১২ মার্চ থেকে সরকারের নির্দেশনায় পুরোদমে পাঠদানের কার্যক্রম শুরু হলে শ্রেণিকক্ষ সংকট দেখা দেয়। এজন্য ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় বারবার তাগাদা। এমনকি 
বাস্তবায়নকারী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে করা হয় অনুনয় বিনয়। তারা কোন অনুরোধই আমলে নিতে চাইছেন না। শুধুমাত্র ভবনের কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। দরজা, জানালা, চেয়ার-টেবিল, ফ্যান, লাইট, সুপেয় পানি সরবরাহের কাজ কবে নাগাদ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শেষ করবে তার কোন নির্ধারিত দিনক্ষণের আভাস মিলছে না। এমন অবস্থায় শ্রেণিকক্ষ সংকট হওয়ায় গাছতলায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। ছাত্ররা প্রাকৃতিক কাজ সারছে বাঁশঝাড়ে গিয়ে। এতে করে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে রোগ জীবাণু। অষ্টম, নবম, দশম ও একাদশ শ্রেণির 
ছাত্রীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশের বাড়িতে গিয়ে ওইসব 
ক্লাসের ছাত্রীরা প্রাকৃতিক কাজ সারতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় দিন পার করছি। রয়েছি প্রচন্ড আতংকে। 

তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা গাছতলায় ক্লাস করতে গিয়ে কোন দুর্ঘটনার শিকার হলে এর দায়ভার কে নেবে? তাছাড়াও বড় ক্লাসের যেসব ছাত্রী মানুষের বাড়িতে গিয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারছে সেইসব ছাত্রী যদি কোন বখাটে দ্বারা কোন ধরনের হয়রানির শিকার হয় তাহলে সেই দায় কে বহন করবে? তার মতে কোনভাবে যদি কোন শিক্ষার্থী অনৈতিকতার শিকার হয় তার দায়িত্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকেই নিতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ছাত্রী আক্ষেপ ঝেড়ে বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে আমরা প্রাকৃতিক কাজ সারতে অন্যের বাড়িতে যাওয়া আসা করছি। এতে করে আমরা প্রচন্ড আতংকে থাকি। কোনভাবে কোন ঘটনার শিকার হলে আমাদের জীবন কলুষিত হবে। ঠাঁই মিলবে না সমাজে। এজন্য আমরা দ্রুত ভবন  নির্মাণের কাজ শেষ করতে জোর দাবি জানাচ্ছি।

সরেজমিনে গেলে অধ্যক্ষের অভিযোগের সত্যতার চিত্র নজরে আসে। একাডেমিক ভবন নির্মাণে সময় ক্ষেপণ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে কথা হয় ঠিকাদার কামরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, যে করে হোক চলতি মাসেই কাজ শেষ করা হবে।

শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী ময়নুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, জুন মাসে কাজ শেষ করা হবে।

একই বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদের সঙ্গে। তিনি মুঠোফোনে বলেন, কাজটি যাতে দ্রুত শেষ হয় সে ব্যাপারে ঠিকাদারকে তাগিদ দেয়া হচ্ছে।

জিকরুল হক/এমএম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে