Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বকেয়া টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে খুন, পিতা-পুত্র গ্রেফতার


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২, ০৮:২০ পিএম
বকেয়া টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে খুন, পিতা-পুত্র গ্রেফতার

কুষ্টিয়াঃ ভেড়ামারায় রক্সি পেইন্টের এরিয়া ম্যানেজার লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বাপ-বেটাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রোববার সাভারের একটি বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভেড়ামারা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, ভেড়ামারা শহরের রেলগেইট দক্ষিণ পাড়া এলাকার মৃত দাউদ খন্দকার ওরফে মতিয়ার রহমানের ছেলে দর্পণ হার্ডওয়ারের মালিক দর্পণ আলী (৬০) এবং তার ছেলে সোহানুর রহমান সোহান (২২)।

সোমবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়।

এসময় র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়ান্ড্রন লিডার ইলিয়াস খান জানান, গত ৩ আগস্ট কুষ্টিয়া ভেড়ামারা সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের গলির পাশে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি অজ্ঞাত পরিচয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে মৃতদেহটি রক্সি পেইন্ট কোম্পানি লিমিটেড এর কুষ্টিয়া অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার লোকমান হোসেন এর বলে শনাক্ত করেন তার স্ত্রী। লোকমান হোসেন গত ১ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরে তার ভাড়া বাসা থেকে কোম্পানির পণ্য অর্ডার নেওয়া ও বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য ভেড়ামারা এলাকার উদ্দেশে বের হন। ওই দিন বিকেলে তার স্ত্রী লোকমান হোসেন এর মোবাইল ফোনে কল দিলে ফোন বন্ধ পান এবং এরপর থেকে লোকমান হোসেন নিখোঁজ হন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে লোকমানের স্ত্রী ২ আগস্ট ভেড়ামারা থানায় তার স্বামীর খোঁজ চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ৩ তারিখ সকালে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভেড়ামারা পাইলট হাই স্কুলের পাশ থেকে লোকমানের মৃতদেহ  উদ্ধার করে পুলিশ।
 
পরে লোকমানের স্ত্রী জিন্নাত আরা টুম্পা বাদি হয়ে ৩ আগস্ট ভেড়ামারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

ইলিয়াস খান জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই হত্যার মোটিভ উদ্ধার এবং আসামীদের ধরতে কাজ শুরু করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১২ সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প এর একটি আভিযানিক দল র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় আসামী দর্পণের বোনের বাসা ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামি সোহানুর রহমান সোহানের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডের স্থান দর্পণ হার্ডওয়ার এর ভাড়াকৃত গোডাউন থেকে হত্যাকারীদের রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করা হয়। 

পরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামলার আসামি সোহানুর রহমান সোহান লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে জানায়, লোকমান ভেড়ামারা শহরের দর্পণ হার্ডওয়্যারের কাছে কোম্পানির বকেয়া বিল আদায়ের উদ্দেশে গেলে ওই দোকানের মালিক দর্পণ আলীর ছেলে আব্দুল আউয়াল র‌্যাভেন তার বাবার দেওয়া বকেয়া টাকা কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে লোকমান হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে র‌্যাভেনের ছোট ভাই সোহান লোকমান হোসেনকে তাদের ভাড়াকৃত গোডাউনে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা ভেড়ামারা কাচারিপাড়া এলাকার শেরেগুল ইসলামের ছেলে প্রান্ত ইসলাম সাব্বির (২২) ও একই এলাকার তাহাজের ছেলে শুভর (২৪) সহযোগিতায় এরিয়া ম্যানেজার লোকমান হোসেনকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

পরেরদিন লোকমানের স্ত্রী ওই দোকানে লোকমানের খোঁজ নিতে গেলে, দর্পণ আলী জানান তার স্বামী গতকাল টাকা নিয়ে সেখান থেকে চলে গেছে। পরে লোকমানের মরদেহ গুম করার জন্য পলিথিনে জড়িয়ে স্কুলের পাশে ফেলে রাখা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার দুজনকে ভেড়ামারা থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। 

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে