ডিএমপি কমিশনার

ঈদে পেশাদার অপরাধীরা জেলে থাকলে চুরি-ছিনতাই কম হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৭, ২০২৩, ০৩:১২ পিএম

ঢাকাঃ ঈদুল আজহার ছুটি চলাকালে ফাঁকা রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। এজন্য ঈদে পেশাদার অপরাধীরা যেন জামিনে মুক্ত হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড না ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত এক মাস যাবৎ পেশাদার অপরাধী, সিঁদেল চোর, ছিনতাইকারী, মলম ও অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। আজকে পর্যন্ত ৬০০ জন পেশাদার অপরাধী গ্রেফতার করা হয়েছে। ঈদের আগে যেন আসামিদের জামিন না হয়, সে ব্যবস্থার চেষ্টা করব। পেশাদার আসামিরা জেলের মধ্যে থাকলে ফাঁকা ঢাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা তেমন একটা ঘটবে না।

খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ফাঁকা ঢাকাতে উঠতি বয়সের অনেক তরুণ মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের প্রতিযোগিতা করেন। আমি এ বিষয়ে কঠোরভাবে বলছি, এ ধরনের প্রতিযোগিতা করবেন না। ব্যারিকেট তৈরি করে আঁকাবাঁকা (জিগজ্যাক) গতিতে গাড়ি চালানোর ব্যবস্থা করবো।

সড়ক দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, প্রতিবছর ঈদের পরে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়। এ দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে আমরা দেখেছি, ড্রাইভারা ট্রিপ নিয়ে বাড়িতে রেস্টে থাকেন। হেলপারদের গাড়ি দিয়ে দুই-চারটা ট্রিপ মারতে বলেন ড্রাইভারা। হেলপাররা যখনই বাস-ট্রাক নিয়ে রাস্তায় বের হয়, তখনই বড় ধরনের দুর্ঘটনা হয়।

পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদের পরে যে ক’দিন ড্রাইভার ছুটিতে থাকবে সে কয়দিন যেন গাড়ি বন্ধ থাকেন। কোনোমতে হেলপার যেন গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের না হন। গত ঈদে আমরা দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক কমিয়ে নিয়ে এসেছি। আশা করবো, এ ঈদে দুর্ঘটনা পরিমাণ কমে আসবে। মহাসড়কের ওপরে একটি আস্থা সৃষ্টি হবে।

পশুর হাটের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে খোলা মাঠ তেমন একটা নেই। তারপরও ঢাকাবাসীর সুবিধার্থে আমাদের দুই মেয়র ২১টি পশুর হাটের ব্যবস্থা করেছেন। পশুর হাট ম্যানেজ করেই যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা সফলতার সঙ্গে তা করে যাচ্ছি। গাবতলীর হাটে দেখবেন পশুর জন্য গাড়ি চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হাটের নিরাপত্তার সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছি। প্রতিটি হাটে হাসিল ঘরে টাকা দেওয়ার জন্য বাইরে ব্যবস্থা করেছি।

প্রতিটি হাটে জাল নোট শনাক্তের জন্য মেশিনের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া পুলিশ ও ব্যাংকের কর্মকর্তা রাখা হয়েছে। হাটগুলোতে ব্যবসায়ীদের নগদ টাকা নিয়ে যেন বাড়ি যেতে না হয় সেজন্য অস্থায়ী ব্যাংকের ব্যবস্থা করেছি। অজ্ঞান ও মলমপার্টির দৌরাত্ম্য যেন না থাকে সেজন্য সচেষ্ট আছি। কোরবানির ঈদ এলে জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়। এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্ক। গত পরশুদিন ডিবি পুলিশ জাল ২ কোটি টাকার নোটসহ একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি বলেন, ঈদুল আজহায় তিনগুণ চ্যালেঞ্জ। ঈদুল ফিতরের শুধু ঘরমুখো মানুষ ছিল। এখন (ঈদুল আজহায়) ঘরমুখো মানুষ আছে, উল্টো দিক থেকে গরুর গাড়ি এবং রাজশাহী ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফলবাহী গাড়ি আসছে। এ কারণে চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। এর সঙ্গে আরেকটি পরিবেশ যোগ হয়েছে সেটা হচ্ছে বৃষ্টি। চতুর্মুখী চাপ থাকা সত্ত্বেও সবার সার্বিক সহযোগিতায় সবকিছু ঠিক আছে। আজকের দিনের পরে শহরে ও হাইওয়েতে ঈদ সংক্রান্ত যানজটের সমস্যা থাকবে না।

বুইউ