ঘূর্ণিঝড়ে বিপদ এড়াতে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক অক্টোবর ২৩, ২০২২, ০৪:০১ পিএম

ঢাকাঃ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড়। এটি অনেকসময় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষত উপকূলবর্তী মানুষের জন্য ঘূর্ণিঝড় একটি আতঙ্কের নাম। পূর্বে আমাদের দেশের বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় আঁচড়ে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ঝড় নিয়ে পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে এই ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমানো যায়। 

ঘূর্ণিঝড় কী? 

ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রে সৃষ্ট বৃষ্টিকে ঘূর্ণিঝড় বা ঘূর্ণিবার্তা বলা হয়। বজ্র ও প্রচণ্ড ঘূর্ণি বাতাস সংবলিত আবহাওয়ার একটি নিম্নচাপ প্রক্রিয়া এটি। এমন ঝড়ে বাতাস প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ছুটে চলে বিধায় একে ঘূর্ণিঝড় নামকরণ করা হয়। 

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত একটি নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কী কী করা উচিত জানুন- 

ঘর মজবুত করুন

ঝড়ের ধকল সবচেয়ে সামলায় ঘর। তাই এখনই ঘরের সবদিক খেয়াল করুন। কাঁচাঘর হলে একটু বেশি সচেতন হওয়া জরুরি। ঘর মজবুত করার ব্যবস্থা করুন। মাটিতে খুঁটি পুতে ঘরের বিভিন্ন অংশে বেঁধে রাখতে পারেন। বেশি প্রয়োজন হলে সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তারা আপনাকে পরামর্শ দেবেন।

আশ্রয়ের স্থান নির্ধারণ 

দুর্যোগের সময় মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশু আর বৃদ্ধদের নিয়ে পড়তে হয় বিপদে। যাদের গবাদিপশু রয়েছে তাদের থাকে বাড়তি চিন্তা। তাই এখনই ঠিকই করে ফেলুন কোথায় আশ্রয় নেবেন। পশু কোথায় রাখবেন বা নিজেরা কোথায় যাবেন তা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আলোচনা করে নিন। এতে বিপদের সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। 

গবাদিপশু নিরাপদ স্থানে রাখুন

ঘূর্ণিঝড় আসার পূর্বেই ঘরের গবাদি পশুগুলোকে নিকটস্থ উঁচু বাঁধে অথবা উঁচু স্থানে রাখুন। গোয়ালঘরে পশু বেঁধে রাখবেন না। এতে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। 

নিয়মিত খবর রাখুন 

ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান, কখন আঁচড়ে পড়তে পারে, বাতাসের গতিবেগ কত থাকবে ইত্যাদি তথ্য জানুন। নির্দিষ্ট সময় পর পর খবর দেখুন বা অনলাইনে খবর পড়ুন। এতে আগাম সতর্ক হওয়ার সুযোগ থাকবে। 

বিপদ সংকেত পেলে

বিপদ সংকেত পেলে সবার আগে বাড়ির শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের আগে নিকটবর্তী নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয়কেন্দ্রে পোঁছে দিন। সময় নষ্ট না করে নিজেও আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যায়। বাড়ি ছাড়ার আগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন। আগুন নিভিয়ে যান।

শুকনো খাবার সংরক্ষণ

যেকোনো দুর্যোগে খাবারের অভাব দেখা দেয়। তাই অতি প্রয়োজনীয় কিছু শুকনো খাবার, যেমন- ডাল, চাল, দেশলাই, শুকনো কাঠ, পানি ফিটকিরি, চিনি, নিয়মিত ব্যবহৃত ওষুধ, ব্যান্ডেজ, তুলা, ওরস্যালাইন ইত্যাদি পানি নিরোধন পলিথিন ব্যাগে ভরে গর্তে রেখে ঢাকনা দিয়ে পুঁতে রাখুন। বাড়িতে শিশু থাকলে গুঁড়া দুধ, সুজি ইত্যাদিও সংরক্ষণ করুন।

জরুরি কাগজপত্র সংরক্ষণ

দলিল, সনদপত্র, লাইসেন্সের মতো প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাগজপত্র একাধিক পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে বন্যামুক্ত এলাকায় কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত ব্যক্তির কাছে রাখতে পারেন। 

আলোর ব্যবস্থা

দুর্যোগের মধ্যেই রাত কাটাতে হবে। তাই হাতের নাগালে দেশলাই, মোমবাতি, হারিকেন, টর্চ লাইট রাখুন।

সম্ভব হলে বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ করে রাখুন। কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ শেষে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়। এসময় নিজের মনোবল শক্ত রাখুন। তাহলেই বিপদ সামলাতে পারবেন। 

এমএম