সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য প্রত্যাহার ছাড়া উপায় নেই: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৪, ২০২২, ১২:৫৪ পিএম

ঢাকাঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের বক্তব্য প্রত্যাহার করা ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য রাষ্ট্রকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদনের ওপর শুনানিকালে রোববার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, রাষ্ট্রদূত কীভাবে বললেন বাংলাদেশীদের অর্থ জমার বিষয়ে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি তা আমাদের বোধগম্য নয়।

আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তাতে প্রমাণিত রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সাংঘর্ষিক।

আদালতে বিএফআইইউ-এর প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি বলেন, সুইস রাষ্ট্রদূত যে বলেছেন, তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা রাখার বিষয়ে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি। তার এ বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তার আরও ভেবে চিন্তে কথা বলা উচিত ছিল।

এসময় দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য সঠিক নয়। তিনি কেন এ ধরনের বক্তব্য দিলেন তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত।

তখন আদালত বলেন, আপনারা যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তা দেখে সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যর সত্যতা পাইনি। আপনাদের (দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ) বক্তব্য জাতিকে বিব্রতকর অবস্থা থেকে মুক্ত করবে। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে হলফনামা আকারে তাদের বক্তব্য দাখিল করতে বলেন এবং আদেশের জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেন।

এর আগে আজ (রোববার), সকালে হাইকোর্টে আসা বিএফআইউ-এর প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেছিলেন, ‘সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির জন্য তথ্য চায়নি। সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধনে সুইজারল্যান্ড কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে আমি আপনাদের জানাতে চাই, সুইজারল্যান্ডে কালো টাকা রাখার কোনও নিরাপদ ক্ষেত্র নয়।’

পরে গত ১১ আগস্ট বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে বলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। 

এদিকে গত ১২ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সুইস রাষ্ট্রদূত মিথ্যা বলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ফিন্যান্স সেক্রেটারি আমাকে আগে জানিয়েছিলেন, তারা তথ্য চেয়েছিলেন, তারা (সুইস ব্যাংক) উত্তর দেননি।’

এমবুইউ