দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের তিন বছরের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ৫, ২০২৩, ০২:৩৩ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকাঃ আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি জেলা ও দায়রা আদালত।

শনিবার (৫ আগস্ট) দণ্ড ঘোষণার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে এক কোটি রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় কোষাগার তোশাখানার মালামাল অবৈধভাবে আত্মসাৎ ও তথ্য গোপন করার অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এরপর গত ১০ মে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। 

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার আজকের শুনানিতে রায় দিয়েছেন, তোশাখানা নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য এবং এটি প্রমাণিত হয়েছে।

বিচারক বলেছেন, ‘ইমরান খান ইচ্ছাকৃতভাবে তোশাখানার উপহার নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ নির্বাচনী ১৭৪ ধারার ওপর ভিত্তি করে করে ইমরানকে তিন বছরের জেল দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন, রায়টি কার্যকরে এটির একটি কপি যেন ইসলামাবাদ পুলিশ প্রধানের কাছে পাঠানো হয়।

আজকের শুনানির আগে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য সদস্যকে মোতায়েন করা হয়। এছাড়া আদালতের ভেতর শুধুমাত্র আইনজীবী ছাড়া আরও কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। যদিও এই রায় ঘোষণার সময় ইমরান খান ও তার আইনজীবী কেউই উপস্থিত ছিলেন না।

এর আগে শুক্রবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে একটি দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে আবার শুনানির জন্য বলেছিল। নিম্ন আদালত ইমরান খানকে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে অভিযুক্ত করেছিল।

সম্প্রতি হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহ ছাড়াও নানা অভিযোগে ২০টি মামলায় আদালতে নিজের হাজিরা দেওয়াকে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার সঙ্গে তুলনা করেন সাবেক ক্রিকেটার ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

গত ৮ জুন রাত পৌনে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক পোস্টে এমনটা দাবি করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির এই নেতা।

টুইটে ইমরান খান লেখেন, ‘আজ ক্রিকেটে নয়, ২০টি মামলায় হাজিরা দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছি। যা নতুন রেকর্ড। হত্যা-সন্ত্রাস থেকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। আশ্চর্যজনকভাবে যখন আমি এনএবি কারাগারে বন্দি ছিলাম, তখন আমার বিরুদ্ধে আরও ৯টি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছিল। সবসময় আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার বিরুদ্ধে ওঠা ১৫০টি মামলার একটিরও আদালতের শুনানি যাতে আমি মিস না করি- তা নিশ্চিত করার জন্য আমি ছুটে চলেছি।’

ইমরানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই শতাধিক মামলা হয়েছে। আরও মামলা হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। মামলাগুলো দায়ের হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রদেশে। বেশিরভাগ মামলাতেই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নামে ভাঙচুরে উসকানির অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতির গুচ্ছ মামলা তো আছেই। 

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর শত শত মামলা হয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে। দেশজুড়ে হওয়া এসব মামলা নিয়ে দিনরাত লড়তে হচ্ছে তাকে। তবে বরাবরই ইমরান খানের অভিযোগ, তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পেছনে হাত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। আর এতে ইন্ধন দিয়েছে দেশটির সেনাপ্রধান।

বুইউ