এবার বাসমতি চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ভারত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ৩১, ২০২৩, ০৫:৫১ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকাঃ স্থানীয় বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নয়াদিল্লির অ-বাসমতি চালের রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর ভারতীয় চাল রপ্তানিকারকদের কাছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের বাসমতি চালের আগাম চালানের অনুরোধ বাড়ছে। চাল রপ্তানি শিল্পর সাথে জড়িত ভারতীয় কর্মকর্তারা সোমবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক এই দেশটি অ-বাসমতি সাদা চালের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। খুচরা বাজারে চালের দাম এক মাসে ৩ শতাংশ বৃদ্ধির পর রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারতের সরকার।

বর্ষা মৌসুমের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ইতোমধ্যে দেশটিতে চালের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মাঝে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নয়াদিল্লি।

দেশটির বাসমতি চালের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক জিআরএম ওভারসিজের (জিআরএমও এনএস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতুল গর্গ বলেছেন, ক্রেতারা আগাম চালানের অনুরোধ করছেন। কারণ সরকার বাসমতি চালের রপ্তানিতেও বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি বলেন, ক্রেতারা সাধারণত প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চালানের আশ্বাসের ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে কিছু ক্রেতা এখন আগস্টেই চালান পাঠানোর অনুরোধ করছেন; যা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে পাঠানোর কথা ছিল।

ভারত ২০২২-২৩ সালে প্রায় ৪৫ লাখ মেট্রিক টন বাসমতি চাল রপ্তানি করেছে। আর এসব চালের শীর্ষ ক্রেতা দেশের তালিকায় রয়েছে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির রপ্তানি নিষিদ্ধ অ-বাসমতি সাদা চালের প্রধান ক্রেতা সেনেগাল, বেনিন, টোগো, বাংলাদেশ এবং কোট ডি’আইভরি। ভারত অতীতে কখনও বাসমতি চালের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেনি। তবে ২০০৮ সালে দেশটির সরকার এই চালের রপ্তানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করেছিল।

নয়াদিল্লির আরেকজন রপ্তানিকারক বলেছেন, আমরা বাসমতি চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে ক্রেতাদের আশ্বস্ত করছি। তবে সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের কারণে কিছু ক্রেতা আতঙ্কে রয়েছেন।

২০২২ সালে প্রায়ই একই ধরনের আকস্মিক এক পদক্ষেপের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে গমের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল ভারত। পরবর্তীতে চিনি ও চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি।

ভারতের বাসমতি চালের বেশিরভাগই দেশটির উত্তরাঞ্চলের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে উৎপাদিত হয়। ব্যাপক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি বছরের শুরুতে এসব রাজ্য প্লাবিত হয়।

২০২৩ সালে বাসমতি চাল চাষাবাদ এলাকা বেড়েছে এবং উৎপাদন গত বছরের তুলনায় বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজয় সেটিয়া নামের দেশটির একজন রপ্তানিকারক।

তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশের অনেক কৃষক বেশি দামের আশায় অ-বাসমতি থেকে বাসমতি চাল উৎপাদনের দিকে ফিরে যাচ্ছেন।

সূত্র: রয়টার্স।

 

এমআইসি