টাইটানিকের কাছে নতুন ধ্বংসাবশেষের সন্ধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ২২, ২০২৩, ১১:০৩ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ আটলান্টিক সাগরের নিচে পড়ে থাকা টাইটানিক জাহাজের কাছে ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। চারদিন আগে সেখানে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানকে খুঁজে পেতে মরিয়া চেষ্টা করছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন কোস্টগার্ড এক বিবৃতিতে বলেছে যে, হরাইজন আর্কটিকে আরওভি (দূর থেকে চালিত যান) টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে সমুদ্রের তলদেশে একটি ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে। রোবটের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করছেন তারা। খবর সিএনএন ও বিবিসির

ওই ধ্বংসাবশেষ পাওয়া এলাকায় আরও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে এটি কি পাঁচ অভিযাত্রী নিয়ে হারিয়ে যাওয়া টাইটানের কি না সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে যে এলাকায় ধ্বংসাবশেষ মিলেছে, সেখানেই হারিয়ে গিয়েছিল সাবমেরিন টাইটান। বিশেষজ্ঞরা এটি টাইটানের হতে পারে বলে ধারণা করছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। সেখানে কথা বলবেন রিয়ার অ্যাড. জন মাগার, প্রথম কোস্ট গার্ড জেলা কমান্ডার এবং ক্যাপ্টেন জেমি ফ্রেডেরিক, প্রথম কোস্ট গার্ড জেলা প্রতিক্রিয়া সমন্বয়কারী।

এর আগে টাইটানের খোঁজে যোগ দিয়েছে ফরাসী এক রোবট। পানির নিচে প্রায় ২০ হাজার ফুট পর্যন্ত যেতে পারে এটি। এছাড়া যেখান থেকে টাইটান সাগরের নিচে রওনা দিয়েছিল। সেই স্থানে হাজির হয়েছে মেডিকেল টিম।

বৃহস্পতিবার ‘ভিক্টর ৬০০০’ নামের এই রোবটকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে ফরাসী এক ‘রিসার্চ বোট’। আটকে থাকা জাহাজ মুক্ত করতে রিমোটের মাধ্যমে বাহু ব্যবহার করে তার কেটে ফেলার পাশাপাশি অন্যান্য কাজেও পারদর্শী এই শক্তিশালী রোবট।

নিখোঁজ সাবমেরিনটি অগ্রসর হচ্ছিল ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের দিকে, যা আটলান্টিক মহাসাগরের তিন হাজার আটশ ১০ মিটার বা সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে রয়েছে। রোববার সাবমেরিনটি ডুব দেয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে জাহাজের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সবশেষ ডাটা অনুযায়ী, সাবটি তিন হাজার আটশ মিটার গভীরে ছিল।

রোবটটি পরিচালনা করা ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা ‘আইফ্রেমার’ এর পরিচালক অলিভিয়ের ল্যোফর বলেন, ভিক্টর ৬০০০ রোবট পরিচালনার দায়িত্বে আছেন ২৫ জন নাবিক, যারা ‘টানা ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত’ কাজ করতে সক্ষম।

এদিকে কানাডিয়ান নৌবাহিনীর একটি জাহাজে ডাইভ মেডিসিনে বিশেষজ্ঞ একটি মেডিকেল টিম উদ্ধার অভিযানের কেন্দ্রে পৌঁছেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে হাইপারবারিক রিকমপ্রেশন চেম্বার। কানাডিয়ান জয়েন্ট রেসকিউ কোঅর্ডিনেশন সেন্টার হ্যালিফ্যাক্সের একজন কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন।

মেডিকেল টিম এবং হাইপারবারিক চেম্বার এইচএমসিএস গ্লেস বেতে ভ্রমণ করেছিল। এটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটা) ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

গত রোববার কানাডার সময় সকাল ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা) সাগরের নিচে যাত্রা শুরু করে সাবমেরিনটি। এই সময় যানটিতে থাকা ৫ জনের জন্য ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন মজুদ ছিল। সেই অনুযায়ী সবকিছু ঠিক থাকলে, কানাডার সময় বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা) পর্যন্ত যানটিতে অক্সিজেন থাকার কথা। সেই সময় এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

তবে চারদিন পার হলেও এখনও ডুবোযানটির সন্ধান মেলেনি। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে খোঁজ চালাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেইসাথে ফিকে হয়ে আসছে সেখানকার পাঁচ আরোহীর জীবিত উদ্ধারের আশা।

মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনী তাদের অনুসন্ধান এলাকার পরিধি এরই মধ্যে দ্বিগুণ করেছে। উদ্ধারকারীরা রীতিমতো সময়ের সাথে যুদ্ধ করছেন।

বুইউ