সরকারি কর্মকর্তার ফোন পানিতে, উদ্ধারে চলল তিনদিন ধরে সেচ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক মে ২৭, ২০২৩, ০১:৪৮ পিএম

ঢাকাঃ ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তা একটি জলাধারের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়েছিলেন। অসাবধানতাবশত তার ফোনটি পড়ে যায় ওই জলাধারে। সেটি উদ্ধার করতে প্রথমে তিনি ডুবুরি নামান ওই গভীর জলাধারে। কিন্তু খুঁজে না পাওয়ায় পুরো পানি সেচে ফেলার নির্দেশ দেন ওই কর্মকর্তা। সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের ছত্তিশগড়ে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম রাজেশ বিশ্বাস। ফুড অফিসার পদে কর্মরত তিনি। গত রোববার তিনি খেরকাট্টা বাধে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। সেখানেই সেলফি তুলতে গিয়ে তার ১ লাখ টাকা দামের স্মার্টফোন পড়ে যায় পানিতে। তারপর ফোন তুলতে স্থানীয়দের দিয়ে ১৫ ফুট গভীর বাঁধে নামিয়ে তল্লাশি চালান। কিন্তু সন্ধান না পেয়ে জলাধারের পানি তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা তিনদিন ধরে ডিজেল পাম্প চালিয়ে জলাধারের ২১ লাখ লিটার পানি বের করে দেন রাজেশ বিশ্বাস। তবে এতকিছুর পর স্মার্ট ফোন উদ্ধার হলেও সেটি আর কোনো কাজ করেনি। 

ওই জলাধারের অর্ধেকের বেশি পানি বের করে দেওয়ার পর টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। সেচ ও জল সম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা তারপর ঘটনাস্থলে যান এবং পাম্প বন্ধ করান। ততক্ষণে জলাধারের জলস্তর ৬ ফুট নেমে গেছে। প্রায় ২১ লাখ লিটার পানি বেরিয়ে গেছে।
 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রিয়াঙ্কা শুক্লা নামে এক কর্মকর্তা বলেছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে (রাজেশ) বরখাস্ত করা হয়েছে। পানি একটি অপরিহার্য সম্পদ। এটি এভাবে নষ্ট করা যায় না।

রাজেশ অবশ্য তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, তিনি বাঁধের ওভারফ্লো অংশ থেকে পানি সেচের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তা ‘ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ছিল না’।

সরকারি কর্মকর্তার এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদরা। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি টুইট করেছেন, মানুষ যখন উত্তপ্ত গ্রীষ্মে পানির জন্য ট্যাংকারের ওপর নির্ভর করছে, তখন ওই কর্মকর্তা লাখ লাখ লিটার পানি নিষ্কাশন করেছেন, যা সেচের জন্য ব্যবহার করা যেতো।

এদিকে, যে ফোনের জন্য এত কাণ্ড, সেটি শেষপর্যন্ত উদ্ধার হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পানি ঢোকায় তা আর সচল করা যায়নি।

বুইউ