যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিলেন এরদোয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক অক্টোবর ২৪, ২০২১, ০৯:২৫ এএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিসহ তুরস্কে নিযুক্ত ১০টি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

তুর্কি সমাজকর্মী ওসমান কাভালার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দেওয়ায় স্থানীয় সময় শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে এ নির্দেশ দেন তিনি। খবর এএফপির।

এরদোয়ান বলেন, বিষয়টি অতি সত্বর সুরাহা করতে আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি। অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেই তারা তুরস্ককে জানতে ও বুঝতে পারবে। যেদিন তারা তুরস্ককে জানতে ও বুঝতে পারবে না, সেদিন তুরস্ক ছেড়ে চলে যাবে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে এসব রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ওসমান কাভালার ঘটনায় তাদের বিবৃতির ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আংকারায় আমাদের দূতাবাস তুর্কিশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি। আমাদের রাষ্ট্রদূত এমন কিছু করেননি, যাতে তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে।

এ ঘটনায় নরওয়ের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তুরস্ক ভালোভাবেই অবগত রয়েছে বলে জানান দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্রুড ম্যাসাইড। তিনি বলেন, তুরস্ককে আমরা আহ্বান জানিয়ে আসছি, তারা যাতে গণতান্ত্রিক মান ও আইনের শাসন মেনে চলেন। ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশনের অধীন তারা এই আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ।

সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ও ২০১৬ সালের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কাভালাকে বিনাবিচারে আটক করে রেখেছে তুরস্ক। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাভালা। ২০১৩ সালের বিক্ষোভে অর্থায়নের অভিযোগ থেকে ইতিমধ্যে তিনি খালাস পেয়েছেন। এরপর সাংবিধানিক আদেশ বাতিল চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এরদোয়ান বলেন, রাষ্ট্রদূতরা তাদের নিজ দেশের ডাকাত, খুনি ও সন্ত্রাসীদের মুক্তি চেয়ে অনুরোধ করতে পারেন না।

কিন্তু তুরস্কের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের জন্য কাভালার ঘটনাকে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখছে মানবাধিকার গোষ্ঠী ও পশ্চিমা দেশগুলো। শুক্রবার এক বিবৃতিতে কাভালা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সুষ্ঠু বিচারের সম্ভাবনা না থাকায়—আমি মনে করি—বিচারের শুনানিতে অংশ নেওয়া এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করার কোনো মানে থাকে না।

সোমবার এক বিরল বিবৃতিতে কাভালার মামলায় ন্যায়বিচার ও দ্রুত সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্র।

এতে বলা হয়, তার বিচারের অব্যাহত বিলম্বের কারণে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও তুরস্কের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে হতাশা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া ইউরোপীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা কাউন্সিল অব ইউরোপের রীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে তুরস্ককে। ১৯৫০ সালে কাউন্সিল অব ইউরোপে যোগ দিয়েছিল আংকারা।

রাষ্ট্রদূতদের বিবৃতির সমালোচনা করে তুর্কিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলিমান সোয়লু বলেন, বিচারাধীন মামলায় আদালতকে রাষ্ট্রদূতরা সুপারিশ কিংবা নির্দেশনা দেবে, তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আইন ও গণতন্ত্র নিয়ে তাদের বোঝাপাড়ার ওপর কালো ছায়া ফেলছে এই সুপারিশ ও নির্দেশনা।

আগামীনিউজ/নাসির