গাজায় নিহত ২৯ হাজার, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেবে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৮:৫২ এএম
ছবি: পিবিএস

ঢাকাঃ গাজায় তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে এই সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করতে পারে আল জাজিরা। একথা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড। তিনি জানিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দেবে। এদিকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় প্রাণহানি ২৯ হাজার ছুঁই ছুঁই করছে।

লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড শনিবার এক বিবৃতিতে জানান, যুক্তরাষ্ট্র কয়েকমাস ধরে গাজার সংঘাতের একটি টেকসই সমাধান নিয়ে কাজ করছে। এর মাধ্যমে গাজায় অন্তত ছয় সপ্তাহের তাৎক্ষণিক ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এই সময়টা কাজে লাগিয়ে আমরা আরও দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে পারব।

তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, সেটাতে ইসরায়েল, মিশর ও অন্যান্যরা অবদান রেখেছেন এবং এটি সব জিম্মিদের তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের ও যুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী বিরতি এনে দেওয়ার সবচেয়ে ভালো বিকল্প। এতে আরও বেশি পরিমাণে জীবনরক্ষাকারী খাদ্য, পানি, জ্বালানি, ওষুধ ও অন্যান্য নিত্যপণ্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের হাতে পৌঁছানো যাবে, যা তাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, আলজেরীয় পরিকল্পনায় একই ফল পাওয়া যাবে না এবং তারা এর বিরোধিতা করতে পারেন। আলজেরীয় পরিকল্পনা নিয়ে ভোটের আয়োজন করলে এটা গৃহীত হবে না।

রোববার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৮৫ জনে। আহত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৮৮৩।

গাজার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১২৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ২০৫ জনকে আহত করেছে।

বিবৃতিতে গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়েছে কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ১৩ হাজার শিশু এবং সাড়ে ৮ হাজারের বেশি নারীকে হত্যা করেছে। অন্তত ৭ হাজার (যাদের ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু) এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা বা নিখোঁজ রয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বোমা হামলায় গাজায় ৭০ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া ২ লাখ ৯০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং  বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

গাজায় ৩৪০ স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং ৪৬ জন সিভিল ডিফেন্স অফিসারকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এছাড়া ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ১৩০ সাংবাদিক।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের আল-আমাল হাসপাতালে ইসরায়েল ট্যাঙ্ক দিয়ে বেশ কয়েকটি সরাসরি হামলা চালিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণে পূর্বাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে অভিযান না করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে।

ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। গত জানুয়ারিতে জাতিসংঘের আদালত একটি অন্তর্বর্তী রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের গ্যারান্টি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।

এমআইসি/