পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৩, ২০২২, ১০:৩৬ এএম

কিশোরগঞ্জঃ জেলার ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্সে পাওয়া টাকার পরিমাণ পূর্বের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। মসনদে আ'লা মহাবীর ঈসা খানের অধস্তন পুরুষ দেওয়ান জিলকদর খানের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক ৪ মাস ৬ দিন পর খোলা হলে প্রায় ১২ ঘন্টা টাকা গণনা শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা।

শনিবার (১২ মার্চ) সকাল ১০টায় মসজিদ কমিটি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বাক্সগুলো খোলা হয়। বস্তা থেকে টাকা বের করে মসজিদের দোতলায় ঢেলে চলে গণনার কাজ। পাগলা মসজিদের নিজস্ব মাদ্রাসার দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা কঠোর নিরাপত্তায় টাকা গণনায় অংশ নেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়ায় অবস্থিত ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে আটটি লোহার দান সিন্দুক রয়েছে। প্রতি তিন মাস পর পর এ সিন্দুকগুলো খোলা হয়। কিন্তু করোনার কারণে এবার ৪ মাস ৬ দিন পর আজ শনিবার দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার টাকা গণনার বিষয়টি জানিয়েছেন।

এর আগে সর্বশেষ গতবছর ৬ নভেম্বর দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৩ কোটি ৭ লাখ ১৭হাজার  ৫৮৫টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল। এবার আটটি দান বাক্স খুলে পাওয়া গেছে ১৫ বস্তা টাকা, বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা। 

মসজিদের দায়িত্বশীল, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন সূত্রে জানা যায়, এখানে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়- এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করে থাকেন। মসজিদে নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রূপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি স্থাপনা। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। এ মসজিদের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি। মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এখানে।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে এ মসজিদটি। মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ ব্যয় করা হয়ে থাকে বলে জানান মসজিদের একজন খাদেম।

এমবুইউ