গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে মা-মেয়েকে ধর্ষণ: ৩ জ্বিনের বাদশার যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১, ২০২১, ১০:৩১ এএম
ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধা: গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে জামালপুর থেকে মা-মেয়েকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ডেকে এনে ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-২ বিচারক। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া মামলার অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-২ বিচারক মো. আব্দুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ও খালাস পাওয়া আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোসাইপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে বেলাল হোসেন, একই গ্রামের বদিউজ্জামানের ছেলে এমদাদুল হক ও শ্যামপুর পারবর্তীপুর গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে খাজা মিয়া। 

খালাস পাওয়ারা হলেন- আজিজুল ইসলাম গোবিন্দগঞ্জের সাতগাছি হাতিয়াদহ গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে ও আসাদুল ইসলাম সুন্দাইল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জ্বিনের বাদশা পরিচয়ে মা ও মেয়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। তারা বিভিন্ন সময় বিকাশের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১২ মে জামালপুর থেকে মা ও মেয়েকে গোবিন্দগঞ্জে ডেকে এনে তাদের কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে গভীর রাতে করতোয়া নদীর চরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় তারা। ওই ঘটনার পর গোবিন্দগঞ্জ থানায় এসে ধর্ষণের শিকার মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয় পুলিশ।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল (পিপি) মো. মহিবুল হক সরকার মোহন জানান, সাড়ে তিন বছর আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যে দিয়ে বিচার কাজ শেষ হয়। আদালতে মা ও মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপর দুই আসামিকে খালাস দেন বিচারক। সেইসঙ্গে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দিতে দণ্ডপ্রাপ্তদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।

তবে আদালতের এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. সিদ্দিকুর রহমান রিপু। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান তিনি।

আগামীনিউজ/ হাসান