দিনাজপুরে খরিপ মৌসুমে বাম্পার ফলনে ধান কাটার উৎসব

দিপংকর রায়, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি মে ৬, ২০২১, ০৭:৫৬ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ
দিনাজপুরঃ উত্তরের জেলা দিনাজপুর ধানের জেলা হিসেবে বরাবরই  সমৃদ্ধ ও প্রসিদ্ধ। এবারও ব্যাতিক্রম নয়  আমন ধানের পাশাপাশি বোরো ধানের সবুজ দিগন্তের মাঠ এখন ধানের বাম্পার ফলনে সোনালী প্রান্তর। মাঠে চলছে ধান কাটার মহা উৎসব।
 
মাঠ থেকে ধানের ফসল তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। কেউ শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন, কেউ আবার যান্ত্রিক (কম্বাইন্ড হারভেস্টিং) ভাবে ধান কাটানো মাড়ানো একসাথে মাঠেই করছেন। যেন প্রকৃতির সাজে সজ্জিত নয়ন জুড়ানো দিগন্ত জুড়ে ধানের সোনালি প্রান্তর।
 
ওবায়দুল্লাহ নামের এক  কৃষকের সাথে কথা বললে স্বস্থির হাসি হেসে ধান ভাল হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। ব্রি ২৮ ধান কাটালাম আশা করছি ৩৮/৪০ মন হবে। কিন্তু খরচ অনেক বেশি সেই তুলনায় ধানের দাম  কম। যে পরিমান খরচ সে রকম ধানের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য জাতের (জামাই কাঠারি) ধান আবাদ করেছি সেগুলোর ফলন আরও ভালো হয়েছে।
 
জুয়েল নামের আরেক চাষী বলেন ফলন বাম্পার হয়েছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এখন পর্যন্ত বালা মসিবত হয় নাই।। তবুও শঙ্কার কথা  শিলা বৃষ্টি হলে ধান সব জমিতে পরে যাবে। আমি কয়েক জাতের ধান লাগিয়েছি। ধানের প্রকার ভেদে ৪০/৪৮ মন প্রতি বিঘায় উৎপাদন হয় বলে তিনি জানান।
 
কয়েকজন ধান কাটা শ্রমিকের সাথে কথা বললে তারা বলেন আমরা ঠাকুরগাঁও থেকে ধান কাটতে আসছি ১১ জন।। পারিশ্রমিকের কথা বলতেই বলেন বিঘা হিসেবে ৪০০০ টাকা নিচ্ছি ধান কেটে ধান মাড়াইয়ের মেশিনে সহায়তা করা পর্যন্ত। জেলার কয়েকটি বাজারে ধানের দাম পর্যবেক্ষনে  ধানের মূল্য প্রতি বস্তা ৭৭ কেজি ৭৩০/৮৫০ টাকা (প্রকার ভেদে) কেনা বেচা হচ্ছে।
 
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো জাফর ইকবাল আগামী নিউজকে বলেন, এবার বোরো চাষের  লক্ষ্যমাত্রা  ৭১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি  কিন্তু  লক্ষ্য মাত্রার থেকেও প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লক্ষ ১১ হাজার ৪৭০ মেট্রিক টন ধান।
 
তিনি আরও জানান কৃষকরা যেন বিরম্বনায় না পরে সে জন্য ধান কাটা মাড়াইয়ে যান্ত্রিকরনে আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।    কৃষি প্রনোদনার মাধ্যমে জেলায়  মোট ৯৪ টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টিং অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে  ৪৯ টি হারভেষ্টিং এবং ৩ টি ব্রিফার মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে বাকী গুলো অতিদ্রুত সরবরাহের অপেক্ষায়।
 
আবহাওয়া কথা বলতেই তিনি বলেন সবই স্রষ্টার হাতে তবে ফলন খুব ভাল হয়েছে লক্ষ মাত্রা পূরনে কোন শঙ্কা আপাতত নেই। জেলায় উচ্চ ফলনশীল  ২০–২২ জাতের ব্রি ধান চাষ হয়েছে কাচা ধান ৭৫০–৯০০( প্রকার ভেদে) টাকা মন দরে ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি খোজ নিয়ে জানতে পেরেছেন বলে জানান।
 
আগামীনিউজ/এএস