প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছে আমতলীর ৩৫০ পরিবার

বরগুনা প্রতিনিধি মে ৬, ২০২১, ০২:২৬ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ
বরগুনাঃ “আশ্রয়ণের অধিকার- শেখ হাসিনা উপহার” এই শ্লোগান বাস্তবায়নে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বরগুনার আমতলী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এতে ভূমিহীন-গৃহহীন ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত যাদের জমি আছে ঘর নেই এমন ৩৫০টি পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার নতুন স্বপ্নের ঠিকানা দু’কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা গৃহ। এতে উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন ও হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্য বদলে গিয়ে পাচ্ছে মাথা গোজার ঠাঁই। উপকার ভোগীরা আনন্দে উচ্ছসিত হয়ে অধীর আগ্রহে সময়ের অপেক্ষা করছেন কখন উঠবে স্বপ্নের গৃহে।
 
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বরগুনার আমতলীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সুবিধাভোগেী পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের কাজ করছেন উপজেলা গৃহ নির্মাণ কমিটির সদস্যরা। ২ কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি সেমি পাকা গৃহ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। সরকারি নির্ধারিত নকশায় সবগুলো ঘর তৈরি করা হচ্ছে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লটে ও গোসলখানাসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে মুজিব শতবর্ষের এ ঘরগুলোতে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৩৫০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে এ গৃহগুলো বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে গুলিশাখালী ইউনিয়নে ১১০টি, কুকুয়া ইউনিয়নে ৩২টি, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে ২৫টি, হলদিয়া ইউনিয়নে ২১টি, চাওড়া ইউনিয়নে ৭২টি, আমতলী সদর ইউনিয়নে ৮১টি ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে ৯টি গৃহ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। 
 
সরজেমিনে উপজলোয় বিভিন্নি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও রাজমিস্ত্রী, কাঠ মিস্ত্রী ও শ্রমিকরা নির্মাধীণ গৃহের ভিটির কাজ করছে, কোথায় ইটের গাথুনি, কোথাও কাঠের কাজ ও চালা নির্মাণ করছেন। এসকল গৃহ নির্মাণ কাজ সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন আমতলী সুযোগ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আসাদুজ্জামান। কোথাও কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে তড়িৎগতিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে গৃহ নির্মাণে এখন পর্যন্ত কোথাও তেমন কোন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। 
 
নতুন গৃহ পাওয়া উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ভিক্ষুক মোঃ হামেদ (৭০) বলেন, আমি ভিক্ষা করে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে বসবাস করছি। বর্তমান সরকার আমাদের কষ্ট লাগবে একটি পাকা ঘর দিয়েছেন। ঘর দেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। দোয়াকরি শেখের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। তার দীর্ঘায়ূ কামনা করি।  
 
একই ইউনিয়নের হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামের প্রতিবন্ধি সফিকুল ইসলাম (২৫) বলেন, আমার বাবা খেয়া পাড়াপাড়ের মাঝি। অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার চালান। আমি প্রতিবন্ধি হয়ে এই ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে বড় হয়েছি। বর্তমান সরকাররে পক্ষ থেকে আমাকে বিনামূল্যে একটি পাঁকাঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। এজন্য আমি ও আমার পরিবারের সবাই অনকে খুশি। আমি শেখ হাসিনার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়াকরি তিনি আরো বেশীদিন ক্ষমতায় থেকে আমাদের মত গরীব, অসহায় ও গৃহহীন মানুষের জন্য কাজ করে যেতে পারেন।  
 
কুকুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কেওয়াবুনিয়া গ্রামের মোঃ রুহুল আমিন বলেন, “আমার থাকার জন্য এই একটি ঝুপড়ি ঘর ছাড়া কিছুই ছিলো না। এ বাড়ি ও বাড়ী কাজকর্ম করে রাতে এসে এই ঝুপড়ি ঘরে বৃষ্টিতে ভিজে কষ্ট করে থাকতাম। এ জীবনে অনেক কষ্ট করছি। এখন আমাদের মা জননী শেখ হাসিনা থাকার জন্য আমাকে একটি পাকা ঘর করে দিচ্ছেন। তাতে আমি অনেক খুশি। তার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করবো তিনি যেন আমাদের মত গরীবদের পাশে সারাজীবন থাকতে পারেন।  
 
গৃহ পেয়ে চাওড়া ইউনিয়নের ঘটখালী গ্রামের রাজিয়া বেগম বলেন, ঘর পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমার কোন ঘর- বাড়ি ছিল না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঘর দেওয়ায় এখন আমার সব কিছুই হল। আল্লাহর কাছে দোয়াকরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন সারা পৃথিবীর কাছে সম্মান পায়। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানকে ঘরে দোয়া করেন জেসমিন, জলিল, রোজিনা, আরিফ, মোকলেস, বাদশা, সীমা, নাসির, কাদের মোল্লা, ফেরদাউস, হিরন মোল্লা, তাহমিনা, রিজন, রুস্তম শিকদার সহ আরো অনেকে।
 
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন পরিবার পেয়েছে তাদের স্বপ্নের আবাসস্থল। গৃহহীন মানুষ খুঁজে পাবে তাদের শান্তির নীড়। অনুভব করবে রাষ্ট্রীয় অভিভাবকত্ব। তিনি আরো বলেন, যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান অসহায় দারিদ্র বঞ্চিত মানুষের  নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি পিতার আদর্শে অটুট থেকে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কল্যাণে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন।
 
তিনি আরো বলেন, আমতলী হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী আসন এ উপজেলা ৩৫০টি ঘর নির্মান হচ্ছে। স্বচ্ছভাবে জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন এসব গৃহগুলো নির্মাণ করছেন।
 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, “মুজিব শতর্বষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় “যার জমি নাই ঘরও নেই, তাদের নামে ২ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দিয়ে বা দানপত্র দিয়ে সরকারীভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন। সে হিসেবে আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৩৫০টি গৃহ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণাধীন গৃহগুলো যাতে টেকসই এবং মান-সম্মত হয় সেজন্য নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।
 
তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় পরবর্তীতে আরো নতুন গৃহ বরাদ্দের জন্য তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সকল অসহায় হতদরিদ্র ও গৃহহীন ব্যক্তিদের পাকা গৃহ করে দেওয়া হবে। গৃহ নির্মাণে কোথায় কোন অনিয়ম হয়নি ৭টি ইউনিয়নে প্রকৃত গৃহহীনরাই এসব।
 
আগামীনিউজ/এএস