চিড়া ও মুড়ি মিলের কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ পীরগাছার জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৫, ২০২১, ০৬:৩১ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

রংপুরঃ জেলার পীরগাছায় দুটি চিড়া ও মুড়ি মিলের বিষাক্ত ধুলাবালি-ছাই উড়ে পরিবেশ ভারী করে তুলছে পীরগাছা বাজার সহ আশেপাশের এলাকা। মিল দুটির কালো ধোঁয়া ছাই উড়ে বাজারের দোকানপাট, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে আসা লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।

অনেকের নাকে-চোখে ছাই পড়ে এবং গাছপালার মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। মিল দুটি এখন পীরগাছাবাসীর জন্য অভিশাপ্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

অভিযোগে জানা গেছে, পীরগাছা বাজারের ইউনিয়ন পরিষদ মোড়ে ‘ভাই ভাই অটো চিড়া ও মুড়ি মিল’ এবং ‘বিধাতার দান চিড়া ও মুড়ি মিল’ দুটি অবস্থিত। এর আশেপাশে পীরগাছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা ভূমি অফিস, আব্দুল কুদ্দুছ কিন্টার গার্টেন, ইউনিয়ন পরিষদ, মসজিদ এবং কয়েক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে মিল দু’টি সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে পরিচালিত হয়ে আসছিল। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র ছাড়াই হাওয়া মেশিন দ্বারা জ্বালানি কাঠের গুড়া, ধানের কুড়া এবং তুষ ব্যবহার করছিল মিল দুটি।

বেশ কয়েক বার ভ্রাম্যমান আদালত জেল-জরিমানা করলেও আইনের তোয়াক্কা করেনি মালিকপক্ষ। মিলের ব্যবহৃত কাঠের গুড়া, ধানের কুড়া এবং তুষ ছোট চিমনি দিয়ে নির্গত ধোঁয়া ও ছাই পীরগাছা বাজারকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলছে। যা হাটুরে লোকজন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, আশেপাশের বসত বাড়ির লোকজনের শরীরে, চোখে পড়ে মারাত্মক ক্ষতি এবং গাছপালার ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাজারের ব্যবসায়ী সাজ্জাদুর রহমান লাবু, রাসেল মিয়া, জালাল উদ্দিনসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, মিলের ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে ব্যবসা করা এবং বাড়িতে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে। অনেকের চোখে পড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। এ কারণে আশেপাশের গাছপালাতে ফল ধরে না। কিন্তু প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ‘বিধাতার দান চিড়া ও মুড়ি মিল’ মালিকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং ‘ভাই ভাই অটো চিড়া ও মুড়ি মিলের মালিক আব্দুস সবুর বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এভাবেই চলে আসছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে ছাড়পত্র লাগবে না। তাই নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আগামীনিউজ/এএস