মারধরের পর ঘরজামাইয়ের মুখে দেয়া হয় বিষ

নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১০, ২০২১, ০৭:৩৩ পিএম
সংগৃহীত

মেহেরপুর : স্বামীর অনুমতি না নিয়ে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন স্ত্রী রোজিনা খাতুন। এতেই রেগে স্ত্রীকে পেটান স্বামী শরিফুল ইসলাম। একপর্যায়ে ক্ষুর দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হন স্ত্রী। এরই জেরে শরিফুলকে গাছে বেঁধে মারধর শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মারধর করেই ক্ষান্ত হননি তারা, মুখে ঢেলে দেন কীটনাশক।

আহত রোজিনাকে হাসপাতালে নিলেও শরিফুলকে গাছের সঙ্গেই বেঁধে রাখা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় পুলিশ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানেই বুধবার সকালে তিনি মারা যান। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে।

শরিফুলের বাবা নিশিপুর গ্রামের ভাদু মণ্ডল বলেন, ১৫ বছর আগে শরিফুলের সঙ্গে দেবীপুর গ্রামের আতাহার আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের ঝগড়া লেগে থাকতো। দীর্ঘদিন আমার বাড়িতেই ছিল তারা। প্রায় ছয় মাস আগে ঘরজামাই হিসেবে চলে যায় শরিফুল।

পারিবারিক কলহের জেরে মঙ্গলবার রাতে শরিফুলকে গাছে বেঁধে মারধর করে মুখে কীটনাশক ঢেলে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে গাছের সঙ্গেই বেঁধে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে আমরা বামন্দী ক্যাম্পকে জানালে পুলিশের একটি দল শরিফুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।

রোজিনা খাতুন জানান, তার স্বামী শরিফুল মাদকাসক্ত ছিলেন। মাদক সেবন করে প্রায়ই তাকে নির্যাতন করতেন। সোমবার রাতে বাড়ি ফিরে ক্ষুর দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন স্বামী। ক্ষুরের আঘাতে তার দুই হাত জখম হয়। স্বামীর হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন বলে স্বীকার করেন।

গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, শরিফুলকে গাছে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় মামলা হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আগামীনিউজ/মালেক