বাকৃবিতে ভোগান্তির আরেক নাম আইডি কার্ড

বাকৃবি প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৯, ২০২২, ০৪:৩৮ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একজন শিক্ষার্থীর জন্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড। যা একজন শিক্ষার্থীর বর্তমান পরিচয় বহন করে। কিন্তু এই আইডি কার্ড পেতেই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের। দিনের পর দিন ঘুরেও আইডি কার্ড না পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। প্রায় ২ বছরেরও অধিক সময় ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলেও জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা বিভাগ থেকে আইডি কার্ড দেওয়া হয়। এখানে এই আইডি কার্ড তৈরির জন্যে মাস্টাররোল শ্রমিক (অস্থায়ী) হিসেবে কাজ করতেন আশরাফুল কালাম নামে শুধু একজন কর্মচারি। কিন্তু বর্তমানে তার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে স্থায়ী চাকরি হওয়ার কারণে তিনি ছাত্রবিষয়ক বিভাগ থেকে চলে যান। এতে আইডি কার্ড তৈরি কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হয়। অন্যদিকে বর্তমানে প্রিন্টিং মেশিন নষ্ট হওয়ায় আইডি কার্ড তৈরি পুরো প্রক্রিয়াটি বন্ধ আছে।  এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য নেই কোনো স্থায়ী কর্মচারি।

পশুপালন অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান আবিদ বলেন, ‘স্টুডেন্ট আইডি কার্ডটি একজন বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীর পরিচয় বহন করে। এর রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। যা একজন শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন জীবনে ওতপ্রতোভাবে জড়িত। বর্তমানে বাসের হাফ পাস, বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণস্থাপনায় প্রবেশ, পাসপোর্ট আবেদনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণকাজে ব্যবহৃত হয় স্টুডেন্ট আইডি। করোনা মহামারীর কারণে বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা যথাযথ সময়ে পায়নি তাদের স্টুডেন্ট আইডি। বর্তমান ক্যাম্পাস ও অফিসিয়াল কার্যক্রম চালু থাকা সত্তে¡ও দেওয়া হচ্ছে না পরিচয়পত্র।

 তাছাড়া আমি বাসে বেশি যাতায়াত করায় ভাড়ার ব্যপারটি নিয়ে প্রায়ই আইডি কার্ড দেখতে চায়। দেখাতে না পাড়লে ঠিকই সম্পূর্ণভাড়া দিতে হচ্ছে।’

এ বিষয়টি নিয়ে সোশালমিডিয়াতে ইসমাত জাহান নীল (শিক্ষার্থী) বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে স্টুডেন্ট আইডি চাইতে গেলে প্রিন্টার অকার্যকর এবং কবে দেওয়া হবে সে বিষয়ে তারা জানাতেও পাড়ছে না। ফলে পাসপোর্ট আবেদন সহ বিভিন্ন কাজে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ব্যবহার করতে পাড়ছি না।’

আশরাফুল কালাম বলেন, আমি ২০১৭ সালে ছাত্রবিষয়ক বিভাগে কাজ শুরু করি। আমি ভালোভাবেই কাজ করতাম। কোনো অভিযোগ ছিল না আমার বিরুদ্ধে। ৩ বছর কাজ করার পরের ওই বিভাবে আমি স্থায়ী নিয়োগ পাই নি। পরে অন্য বিভাগে নিয়োগ পেলে সেখানে চলে যায়। তার পরেও মাঝে মাঝে আমি কাজ কওে দিয়ে আসি। একসাথে দুই কাজ করা একটু ঝামেলা। তাই এখন নিয়মিত যেতে পারি না। আমাকে নিয়োগ দিলেই আমি আবার সেখানে কাজ করবো।

এ বিষয়ে সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, আশরাফুল কালাম নামে যে কাজ করতো তিনি আইডি কার্ড তৈরির বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। কিন্তু তার স্থায়ী চাকরি হওয়ার কারণে সে এখান থেকে চলে যায়। পরে তাকে সপ্তাহে ১/২ দিন কাজ করার জন্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রিন্টার মেশিন নষ্ট হয়েছে। এটি মেরামত অথবা কেনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ খাতে বছরে খুবই কম বাজেট দেওয়া হয়। কোষাধ্যক্ষের সাথে বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে কথা বললেও কোনো ফলাফল আসেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. রাকিব উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলওে তাকে পাওয়া যায়নি।

ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ. কে. এম জাকির হোসেন বলেন, প্রিন্টার মেরামতের জন্যে পাঠানো হয়েছে। আমরা আশরাফুল কালামকে আমাদের বিভাগে বদলি করে ছাত্রবিষয়ক বিভাগে আনার ব্যবস্থা করবো। উপাচার্য স্যারের সাথে কথা বলে শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।

আগামীনিউজ/শরিফ