Dr. Neem on Daraz
Victory Day

করোনায় বিপাকে উত্তরাঞ্চলে ডেকোরেটর ও মাইক মালিকরা


আগামী নিউজ | জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২১, ০৩:১৭ পিএম
করোনায় বিপাকে উত্তরাঞ্চলে ডেকোরেটর ও মাইক মালিকরা

ছবি : আগামী নিউজ

উত্তরাঞ্চলে ডেকোরেটর ও মাইক মালিকরা চরম বিপাকে পড়েছে। অতিমারি করোনা কাল  শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সভা-সমাবেশ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান। ফলে কাজ মিলছে না ডেকোরেটর ও মাইক মালিকদের।  ইতোমধ্যে বিদায় দেয়া হয়েছে শ্রমিকদের । কিন্তু মালিকরা হয়েছে দিশেহারা। এই জনপদে কমপক্ষে ১০ হাজার ডেকোরেটর ও মাইক  মালিক রয়েছে।  এদের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকের সংখ্যা আনুমানিক ৫০ হাজারের মতো।  

দিনমজুর  শ্রেণির এসব শ্রমিকরা  পেট বাঁচার তাগিদে নানান পেশায় জড়িত হয়ে গেছে।  কিন্তু  মালিকরা কোনভাবেই  পারছেনা পেশা বদল করতে।  ডেকোরেটর ও মাইকে  যে পুঁজি বিনিয়োগ করা আছে তাও ফেরত পাওয়ার কোনভাবেই নেই সম্ভাবনা। লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেই ডেকোরেটর ও মাইক মালিকরা  ব্যবসা করেন।  করোনার আগে সভা-সমাবেশ হলে  মাইকের ব্যবহার হতো।  বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও বিয়ের অনুষ্ঠানে করা হতো সাজসজ্জা।  এসব কাজ করতো  ডেকোরেটর  মালিকরা। 

বংশ পরম্পরায় অনেকেই এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সভা, সমাবেশ ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে সাজসজ্বা করেই যা আয় হতো তা দিয়েই তাদের অতি স্বাচ্ছন্দে সংসার চলতো। কোভিডের অতিমারি আর লকডাউন সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। একাধিক ডেকোরেটর ও মাইক মালিকরা জানিয়েছেন তাদের ব্যবসা চলমান থাকার সময় তারা পুরোপুরি মধ্যবিত্ত জীবন জাপন করতো। অনেক সময় সাধ্যমতো পাড়াপ্রতিবেশিদের সহোযগীতাও করতো। অথচ বর্তমান  পরিস্থিতিতে  না পারছে চাইতে, না পারছে দিতে এমন অবস্থায় চোখের লজ্জায় অনেক ডেকরোটের ও মাইক মালিকরা খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করার চেষ্টা করছে।

কথা হয় ডেকরেটোর মালিক রবিন, সাদেকুল , আব্দুল জলিল এর সঙ্গে। তারা জানান পৈত্রিক সূত্রে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাড়ি, পাতিল, প্লেট, জগ, গ্লাস, সামিয়ানা ভাড়া দেয়া হতো। কাঠ, বাশ দিয়ে মঞ্চ ও তোরণ তৈরি করা হতো। বিনিময়ে নেয়া হতো নগদ অর্থ। এ ব্যবসা করে তাদের সংসার বেশ স্বচ্ছল ছিল। মহামারী করোনার কারনে জনসমাগমে সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে অনুষ্ঠান না হওয়ায় প্রায় দেড় বছর ধরে বেকার সময় কাটছে। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঞ্চিত পুজিতে হাত দিতে হয়েছে । চলমান পরিস্থিতিতে কোন কানা কড়িও আর সঞ্চয় নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে বেচে থাকার চেষ্টা চলছে।

কথা হয় মাইক মালিক আরমান হোসেন , জাহিদ হোসেন ও শফিয়ার রহমান এর সঙ্গে । তারা বলেন সভা-সমাবেশ না হলে তাদের মাইক তো আর কেউ ভাড়া নিবে না। আর মাইক ভাড়া না নিলে আয় রোজগার ও বন্ধ থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। তাদের মতে মাইক ও এর সঙ্গে অন্য ইকুপমেন্টগুলো মাসের পর মাস পড়ে থাকায় সে গুলোতে মরিচা ধরেছে। এমন অবস্থা আর ৬ মাস চললে মাইক ও এর সঙ্গে জড়িত যন্ত্রাংশগুলো বেচতে হবে ভাঙাড়ীর দোকনে। তাদের মতে ডেকরেটোর শ্রমিক ও মাইক অপারেট যারা করতো তারা বেচে থাকার তাগিদে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে গেছে। কেউ দিনমজুরি, কেউ ইটা খোলায়, কেউ মাছ ধরার কাজে নেমেছে। অনেক সময় তারা কাজ না পেলে বাইরের এলাকায় গিয়ে ভিক্ষা বৃত্তি করে জীবন ধারনের চেষ্টা করছে। সে কারনে  ডেকোরটের ও মাইক মালিকরা তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের কাছে প্রনোদনার দাবি করেছেন।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে