Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৭


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২০, ০৭:১৯ পিএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৭

সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন।
সত্য সুপথ না চিনিলে পাবিনে মানুষের দরশন॥
ফরিয়া মহাজন যে জন
তার বাটখারাতে কম
তারে কসুর করবে যম;
গদিয়ান মহাজন যেজন
বসে কেনে প্রেমরতন॥
পরের দ্রব্য পরের নারী হরণ করোনা
পারে যেতে পারবে না।
যতবার করিবে হরণ
ততোবার হবে মরণ॥
লালন ফকির আসলে মিথ্যে
ঘুরে বেড়ায় তীর্থে তীর্থে।
সই হলো না একমন দিতে
আসলেতে প’লো কম॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা :
মানুষের মনের দ্বারা সুপথ-কুপথ রচিত হয়। মন সদা বস্তুতে বস্তুতে বিরাজ করে। তাই মানুষ সবসময় বস্তুমূখী হয়ে থাকে। সাঁইজী লালন শাহ তাই মনকে সুপথে চলার জন্য আহবান করেছেন। মন যদি বস্তুর উপরে উপরে প্রজ্ঞাবান অবস্থায় না থাকে তাহলে তার ভাগ্যে প্রজ্ঞাবান মানুষ গুরু পাওয়া সম্ভব নয়। মানুষের মন যখন বস্তুর উপরে উঠে তখন তার প্রজ্ঞাবান কর্মফলের কারণে সে নিজের মনে প্রজ্ঞার সৃষ্টি করে।

মন কোন সময় স্থির থাকে না। মন সবসময় বস্তুর মধ্যে অবস্থান করে। মন পরের দ্রব্য পাওয়ার বাসনা বা পরের নারী চিন্তা করার কারণে তা হরণ পর্যায়ে পর্যবসিত হয়। অন্যের দ্রব্য বা নারীর চিন্তা করার অর্থই তা হরণ করার সমতুল্য। এই হরণ করার কারণে তার মনের বার বার মৃত্যু ঘটে। প্রকৃতপক্ষে বস্তুর আকর্ষণ বা তৃষ্ণায় মানুষ কে বস্তুর মৃত্যু ঘটায়। এমন কি মনোজগতে প্রজ্ঞায় না থাকতে পারাও এক জাতীয় মৃত্যু সমতুল্য।

নিজের মধ্যে এই প্রজ্ঞা জ্ঞান অর্জনের জন্য নিজের দেহমনই প্রকৃত স্থান। নিজের দেহমনের বাইরে কোথাও তীর্থে তীর্থে ভ্রমণ করলেই সত্য মেলে না। বরং একমন দিয়ে সব প্রজ্ঞাবান গুরুর নির্দেশনা মোতাবেক নিজের মধ্যে সাধনার দ্বারা সত্য প্রতিষ্ঠা করাই প্রকৃত প্রজ্ঞাবান কর্ম বা মুক্তি।

০৮ জুন ২০১৭               রাত— ৯:১০

 

আগামীনিউজ/এএম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে