Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৩


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ  প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯, ০৮:৫৩ এএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৩

রাখিলেন সাঁই কূপজল করে আন্ধেলা পুকুরে।
কবে হবে সজল বরষা, রেখেছি মন সেই ভরসা
আমার এ ভগ্নদশা যাবে কতদিন পরে
এবার যদি না পাই চরণ আবার কি পড়ি ফ্যারে॥
নদীর জল কূপ জল হয়, বলবাঁওড়ে পড়ে রয়
সাধ্য কি সে গঙ্গাতে যায়, গঙ্গা না এলে পরে
তেমনি জীবের ভজন বৃথা তোমার দয়া নাই যারে॥
যন্তর পড়িয়ে অন্তর রয় যদি লক্ষ বছর
যন্ত্রিক বিহনে যন্ত্র কভু না বাজিতে পারে
আমি যন্ত্র তুমি যন্ত্রী সুবোল বলাও মোরে॥
শাস্ত্রে শুনেছি খাঁটি, পতিত পাবন নামটি
পতিতকে না তরাও যদি, কে ডাকবে ওই নাম ধরে
লালন বলে তরাও গো সাই এই ভব-কারাগারে॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা: পানি নদী, বাঁওড়, কুপজল বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। যে পানি ডোবায় বা পুকুরে পড়ে থাকে সেই পানির মধ্যে স্রোতে বা প্রবাহ না থাকার কারণে কুপজল আকারে বদ্ধ পানিতে পরিণত হয়। সে পানি আর তার সর্বশেষ উদ্দেশ্য গঙ্গা বা সাগরে পড়তে পারে না। তেমনিভাবে মানুষ যদি সাধনার দ্বারা তার প্রজ্ঞার মাধ্যমে তার শেষ ঠিকানা সেই মহাশক্তির সাথে একাকার হতে না পারে তাহলে তার জীবন ব্যর্থ।

তাই সাঁইজী লালন নিজের দুর্বলতাকে স্বীকার করে বলছেন মানুষ যন্ত্র তার পক্ষে কীভাবে সচল হবে যদি যন্ত্রিক তাকে ব্যবহার না করে। তাই সেই মহাশক্তির আগমনের জন্য তিনি আহ্বান করছেন। মানুষ যখন তার চিন্তা চেতনা দ্বারা তার প্রকৃত প্রজ্ঞা অর্জন করতে সংকল্পবদ্ধ হয় তখন প্রকৃতিও তার মনের বাসনা পূরণ করতে সহায়তা করে।

লালন সাঁইজী মানব জীবনকে এক কারাগার হিসেবে মনে করেন। যদি সাধনার শক্তি দ্বারা প্রজ্ঞা অর্জন করা না যায় তাহলে এই সীমাহীন কারাগার থেকে মুক্তি নেই। বিশ্ব প্রকৃতির শক্তির কাছে তাই সাঁইজী আকুতি করে আহ্বান জানাচ্ছেন সেই শক্তি যেন নিজে দয়া করে তাকে সহায়তা করে। প্রজ্ঞার শক্তি অর্জনের দ্বারা এই ভব কারাগার থেকে মানুষ মুক্তি পায়।

০৭-০৬-২০১৭ 

সকালঃ ৮:৪০

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে