Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আজ জহির রায়হানের ৪৬তম তিরোধান দিবস


আগামী নিউজ | বিনোদন ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২১, ১০:০১ এএম
আজ জহির রায়হানের ৪৬তম তিরোধান দিবস

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ চলচ্চিত্র পরিচালক, সাংবাদিক, ঔপন্যাসিক ও গল্পকার জহির রায়হানের তিরোধান দিবস আজ। ১৯৭২ সালের আজকের এ দিনে ঢাকার মিরপুর থেকে নিখোঁজ হন তিনি।

১৯৭২ সালের এই দিনে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ভাই শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের মৃতদেহ মিরপুরের বধ্যভূমিতে খুঁজতে গিয়ে আর ঘরে ফেরা হয়নি তার।

বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞের তদন্তে ১৯৭২ সালে জহির রায়হানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এ কমিটির কার্যক্রম চলাকালেই অজ্ঞাত সূত্রের খবর পেয়ে ওই বছরের ৩০ জানুয়ারি অগ্রজ সাংবাদিক শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের সন্ধানে বেরিয়ে আর ফিরে আসেননি এই নন্দিত চলচ্চিত্র পরিচালক। মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের হাতে মিরপুরে তিনি শহীদ হন বলে পরে জানা যায়। তবে তার মৃতদেহটিও পাওয়া যায়নি।

মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ও সৈয়দা সুফিয়া খাতুন দম্পতির সন্তান জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ফেনীর মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবারিক নাম আবু আবদার মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ।

জহির রায়হান ১৯৪০ সালে কলকাতা মডেল স্কুলে ভর্তি হন। তার বাবা তখন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। মডেল স্কুলে তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেইন) থেকে সপ্তম শ্রেণী পাস করে আলিয়া মাদ্রাসার অ্যাংলো-পার্শিয়ান বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বাবার সঙ্গে মজুপুরে চলে আসেন। স্থানীয় আমিরাবাদ হাইস্কুল থেকে ১৯৫০ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। ঢাকা কলেজে পড়াশোনার সময় তিনি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর এক বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি পড়ে বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৫৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীতে অনার্স পাস করেন। এরপর এমএ’তে ভর্তি হন।

মুক্তিযুদ্ধের কিছুকাল আগে তার নির্মিত ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্র মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ নির্মাণ করে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি।তার প্রযোজনায় নির্মিত হয় মনের মতো বউ, জুলেখা, দুই ভাই, সংসার, শেষ পর্যন্ত এবং প্রতিশোধ।

এ ছাড়াও ‘কখনো আসেনি’, ‘সোনার কাজল’, ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘বাহানা’, ‘বেহুলা’, ‘আনোয়ারা’, ‘সঙ্গম’ প্রভৃতি তার কালজয়ী চলচ্চিত্র। তার রচিত উপন্যাসের মধ্যে ‘হাজার বছর ধরে’, ‘আরেক ফাল্‌গুন’, ‘বরফ গলা নদী’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘আর কত দিন’, ‘কয়েকটি মৃত্যু’, ‘তৃষ্ণা’ উল্লেখযোগ্য। ‘সূর্য গ্রহণ’ তার সুপরিচিত গল্পগ্রন্থ।

সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন জহির রায়হান। উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি হলো— আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৪, হাজার বছর ধরে), নিগার (কাঁচের দেয়াল, শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবি), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭১, সাহিত্য : মরণোত্তর, ১৯৭২ সালে ঘোষিত), একুশে পদক (১৯৭৭, চলচ্চিত্র : মরণোত্তর) ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯২, সাহিত্য : মরণোত্তর)।

আগামীনিউজ/সোহেল 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে