Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ভারতে কোনো ধর্মীয় বৈষম্য নেই, দাবি মোদির


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৩, ০১:৩৮ পিএম
ভারতে কোনো ধর্মীয় বৈষম্য নেই, দাবি মোদির

ঢাকাঃ ভারতে ধর্মীয় বৈষম্যের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার দাবি, তার সরকারের অধীনে ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয় না।

বিজেবি সরকারেরপ্রধান নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন। সেখানে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মোদি এই দাবি করেন। 

তিনি বলেন, তার সরকারের অধীনে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের কোনো অস্তিত্ব নেই।

সংবাদ সম্মেলনে মোদিকে জিজ্ঞেস করা হয় তার দেশের মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অধিকারের উন্নয়ন ও বাক স্বাধীনতা রক্ষা করতে তিনি কী পদক্ষেপ নিতে চান?

উত্তরে মোদি বলেন, এসব উন্নয়নের কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের সরকার গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারে। তা প্রমাণ করতে পেরেছি। আমার সরকারের অধীনে ভারতে জাত, বিশ্বাস, ধর্ম, লিঙ্গ, কোথাও কোনো বৈষম্যের স্থান নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে করা তাদের প্রতিবেদনে, ভারতে মুসলিম, হিন্দু দলিত, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, এর পাশাপাশি সাংবাদিকদের ওপরও দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিল।

মানবাধিকার কর্মীরা ও বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বহু আইনপ্রণেতা তাকে প্রকাশ্যে এ বিষয়টি মোদির কাছে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। 

মোদির এমন বক্তব্যের জেরে হোয়াইট হাউজের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সেখানে মোদির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন বিক্ষোভকারীরা। 

বিক্ষোভে ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিলের অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর অজিত সাহি বলেন, মোদির বোঝা উচিত সংবাদ সম্মেলনে কেন তাকে প্রথম এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। ভারতে অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট।

ভারতীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান হিন্দুত্ব ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা রাকিব হামিদ নায়েক বলেন, মোদির মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। সংখ্যালঘুদের জন্য ভারত একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।

২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নরেন্দ্র মোদি পাঁচবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক মর্যাদার সাথে এই সফরটিই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে মোদির প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। যদিও মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির অধীনে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে উদ্বেগ রয়েছে।

ওয়াশিংটন দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের আশা করছে। কারণ চীনকে মোকাবিলায় ভারতকে পাশে রাখা প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের। তবে মানবাধিকার কর্মীরা উদ্বিগ্ন যে, ভূরাজনীতির হিসেব-নিকেশে হয়তো ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো চাপা পড়ে যাবে।

আর এ কারণে বেশ কয়েকটি মার্কিন মানবাধিকার গোষ্ঠী আগেই মোদির সফরের সময় বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, চীনকে মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের গুরুত্ব এবং উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ওয়াশিংটনের পক্ষে ভারত ও তার সরকারের মানবাধিকারের সমালোচনা করা বেশ কঠিন করে তুলেছে। আর এ কারণেই বৃহস্পতিবার মোদির জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছেন বাইডেন।

রয়টার্স বলছে, মার্কিন কংগ্রেসের দুই মুসলিম নারী সদস্য প্রতিনিধি ইলহান ওমর এবং রাশিদা তালাইব প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজের মতো অন্যান্য প্রগতিশীল আইন প্রণেতাদের সাথে নিয়ে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসে মোদির ভাষণ বয়কট করেছেন। মূলত ভারতীয় ভিন্নমতাবলম্বী এবং সংখ্যালঘুদের - বিশেষ করে মুসলমান - ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে মোদির ভাষণ বয়কট করেন তারা।

মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, মোদির আক্রমনাত্মক হিন্দু জাতীয়তাবাদ ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য জায়গাকে সংকীর্ণ করে তুলেছে।

নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, ভারত সরকারের নীতির সুবিধা সকলের কাছেই পৌঁছাচ্ছে। তবে মানিবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, মোদি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারতে ভিন্নমতাবলম্বী, সংখ্যালঘু এবং সাংবাদিকরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে