Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২, ১১:৫৮ এএম
সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড

অং সান সুচি

ঢাকাঃ লাইসেন্স বিহীন ওয়কিটকিসহ বেশ কয়েকটি মামলায় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। সোমবার (১০ জানুয়ারি) জান্তাশাসিত দেশটির একটি আদালত এই রায় ঘোষণা করেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

আদালতের রায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রটির বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, আমদানি-রফতানি আইন লঙ্ঘন করে হ্যান্ডহেল্ড রেডিও কাছে রাখার দায়ে দুই বছর এবং সিগন্যাল জ্যামারের সেট রাখার দায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দু’টি সাজাই একসঙ্গে চলবে।

এছাড়া করোনাভাইরাস সম্পর্কিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার কারণে দায়েরকৃত পৃথক অভিযোগে আদালত সু চিকে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি।

দেশটিতে নোবেল বিজয়ী ৭৬ বছর বয়সী সুচির বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন মামলা বিচারাধীন। এসব মামালায় সম্মিলিতভাবে তার একশ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুচি।

এর আগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার দায়ে গত ৬ ডিসেম্বর সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। সরকারের শীর্ষ পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম কোনো রায় ছিল সেটি।

তবে সু চির বিরুদ্ধে এই রায়ের পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সেসময় আদালত সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পরে সেটি দুই বছর কমিয়ে দেয় মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

তাছাড়া গত বছরের শেষের দিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সুচির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও এনএলডি দলের স্পিকার উইন হেইনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয় রাজধানী নাইপিদোতে একটি বিশেষ আদালত।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির এনএলডি (ন্যাশনাল লি ফর ডেমোক্র্যাসি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পরপরই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে চড়াও হয় সামরিক সরকারও। এতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন সহস্রাধিক মানুষ, বন্দি হয়েছেন কয়েক হাজার।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা হারানোর পর মিয়ানমারের সাবেক শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় কোনো মামলার রায়।

অভ্যুত্থানের পর ৭৬ বছর বয়সী গৃহবন্দি সু চির বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দায়ের করে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। মামলাগুলো যেসব অভিযোগে করা হয়েছে তার মধ্যে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার, নিয়মবহির্ভূতভাবে ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহার, ক্ষমতায় থাকাকালে ঘুষ গ্রহণ, নিজের দাতব্যসংস্থার নামে অবৈধভাবে ভূমি অধিগ্রহণ ও করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় গাফিলতিসহ উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার বিষয়টি রয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাচ্যুত হলেও মূলত গত জুন থেকে রাজধানী নেইপিদোর বিশেষ সামরিক আদালতে এসব মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। রয়টার্স বলছে, এসব মামলায় সু চির সর্বোচ্চ শাস্তি হলে মোট কারাদণ্ডের মেয়াদ ১০০ বছর ছাড়িয়ে যেতে পারে।

আগামীনিউজ/বুরহান 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে