Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অবিবাহিত নারীদেরও গর্ভপাতের অধিকার দিলো ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২, ০৭:৩৭ পিএম
অবিবাহিত নারীদেরও গর্ভপাতের অধিকার দিলো ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকাঃ ভারতের অবিবাহিত নারীদেরও গর্ভপাতের অধিকার দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, গর্ভপাতের অধিকার দেশের সব নারীর জন্যই প্রযোজ্য এবং তিনি বিবাহিত নাকি বিবাহিত নন তা সেখানে কখনোই বিচার্য হতে পারে না।

শুধু অবিবাহিত হওয়ার জন্য কোনো নারীকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করাটা অসাংবিধানিক বলেও মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত।

এ গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণার সময় বিচারপিত ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়, এ. এস. বোপান্না ও জে. বি. পারডিওয়ালার বেঞ্চ 'ম্যারিটাল রেপ' বা বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ঘটা ধর্ষণকেও এক রকম ধর্ষণ বলে একরকম স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও তা শুধুমাত্র গর্ভপাতের অধিকারের পটভূমিতেই দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট এ প্রসঙ্গে বলেছে, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগনেন্সি অ্যাক্ট বা গর্ভপাত আইনে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাতে 'ম্যারিটাল রেপ'কেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

এমন পর্যবেক্ষণ 'ম্যারিটাল রেপ' নিয়ে ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ রায়ের পথ প্রশস্ত করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এটা ভারতে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত একটি ইস্যু, যার পক্ষে-বিপক্ষে বহু যুক্তি-তর্ক আছে।

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে আরও বলেছে, একজন 'সিঙ্গল' বা 'অবিবাহিত' নারী যদি তার অবাঞ্ছিত প্রেগনেন্সি গর্ভপাতের মাধ্যমে শেষ করে দিতে চান, তাহলে সেটা তার মৌলিক অধিকার।

তাকে যদি ওই অবাঞ্ছিত প্রেগনেন্সি টেনে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়, তাহলে নিজের জীবন কোন খাতে বইবে সেটা স্থির করার অধিকার রাষ্ট্র তার কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

আজকের এই গুরুত্বপর্ণ রায়টি এসেছে ২৫-বছর বয়সী এক অবিবাহিত নারীর আবেদনের পটভূমিতে। তার গর্ভপাতের অধিকার খারিজ করে দিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট সম্প্রতি যে রায় দিয়েছিল তার বিরুদ্ধেই তিনি সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হন।

দিল্লি হাইকোর্টের যুক্তি ছিলো, ওই নারী অবিবাহিত বলে গর্ভপাত আইনের সুবিধা পেতে পারেন না - এবং যে শারীরিক সম্পর্কের কারণে তিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন সেটাও ছিল পারস্পরিক সম্মতির ('কনসেনসুয়াল') ভিত্তিতেই।

কিন্তু তিনি সুপ্রিম কোর্টকে জানান, তার সঙ্গী পরে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।

এছাড়া তিনি একটি দরিদ্র কৃষক পরিবারের পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বও তার কাঁধেই - ফলে একটি পিতৃহীন সন্তানকে প্রতিপালন করার ক্ষমতাই তার নেই।

এরপর গত ২১শে জুলাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, মেডিক্যাল বোর্ড যদি বলে গর্ভপাত করালে ওই নারীর কোনো শারীরিক ক্ষতি হবে না। তাহলে তিনি তার গর্ভের ভ্রূণটি শেষ করে দিতে পারবেন।

এরপর কোর্ট বলে, ২০২১ সালে দেশে যে গর্ভপাত আইন সংশোধন করা হয়েছে তাতে 'হাজবেন্ড' বা স্বামীর বদলে 'পার্টনার' বা সঙ্গী শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

ফলে বিচারপতিদের ব্যাখ্যা ছিলো, গর্ভপাতের অধিকার শুধু বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকুক এটা দেশের পার্লামেন্টও চায় না।

আজকের রায় ওই অধিকার কার্যত দেশের বিবাহিত বা অবিবাহিত - সব নারীর জন্যই সম্প্রসারিত করল।

সূত : বিবিসি

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে