Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মাস্ক পরলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে ৮০ শতাংশ


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২১, ১০:১৯ এএম
মাস্ক পরলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে ৮০ শতাংশ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নজরদারি কমে যাওয়ায় মাস্ক ব্যবহারে অনীহা দেখা গেছে বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কমে গেছে মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করলে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ছড়ানোর শঙ্কা কমে যায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। তাই মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়া দরকার বলে মনে করেন তারা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভ্যাকসিন বা টিকা আসার আগে মাস্ককেই প্রধান অস্ত্র হিসেবে দেখছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার কথা বারবার বলে আসছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে বলেন, কোভিডের বিস্তার প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের চেয়েও শক্তিশালী সুরক্ষা দেবে মাস্ক। তিনি বলেন, তাদের কাছে বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ রয়েছে যে, করোনায় মাস্কই সবচেয়ে ভালো সুরক্ষা দিচ্ছে।

দেশে যারা এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন তাদেরও অনেকে মনে করছেন যে, টিকা পেয়ে গেলে আর মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার দরকার হবে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা নেওয়াটাই নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র নিশ্চয়তা নয়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘টিকা দেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ টিকা নেওয়ার পর কোভিডে আক্রান্ত না হলেও অন্যকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা থাকবে। টিকা নেওয়া ব্যক্তির শরীরে কোভিড-১৯ প্রবেশ করলে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে লড়াই করবে পরাজিত হবে, কিন্তু ওই সময় তার হাঁচি-কাশি-স্পর্শে অন্যকে আক্রান্ত করবে।’

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শতভাগ কার্যকর কোনো টিকা পাওয়া যায়নি। সর্বোচ্চ ৯০ ভাগের তথ্য জানা যাচ্ছে। টিকা নেওয়ার পরও বাকি ১০ ভাগ রোগ ছড়াবে। দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এলেই সুরক্ষাবলয় তৈরি হওয়ার কথা বলা যাবে। তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার পরও সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কারণ একজন টিকা নেওয়ার পরও ক্লিনিক্যাল ও ফিজিক্যালি রোগ ছড়াতে পারবে। তিনি আরো বলেন, টিকা রোগের তীব্রতা কমাবে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলেও তাকে হাসপাতালের যেতে হবে না, কিন্তু অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়াবে ঠিকই।

গত জুন মাসে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাইরে গেলে তো বটেই, বাড়িতেও মাস্ক পরা ভালো। এতে করে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব। তাই গবেষকরা বাড়িতেও মাস্ক পরে থাকার উপদেশ দিয়েছেন।

স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল গ্লোবাল হেলথ-এ প্রকাশিত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, বাসাবাড়িতে মাস্ক পরলে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানো ৭৯ শতাংশ ঠেকানো সম্ভব। তবে প্রথম কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই পরিবারের সদস্যরা মাস্ক পরা শুরু করলেই কেবল এই ফল পাওয়া যাবে। জীবাণুনাশক দিয়ে বারবার ঘর পরিষ্কার করলে প্রায় সমান ফল পাওয়া যাবে। এই উপায় মানলে সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকানো যাবে ৭৭ শতাংশ।

অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাস্ক না পরা থাকলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ২৩ গুণ বেড়ে যায়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাঁচি বা কাশির পর বাতাসে ড্রপলেট ছড়ানোর মাধ্যমে ‘কফ ক্লাউড’ তৈরি হয় এবং তা ৫ থেকে ৮ সেকেন্ড থাকে। মাস্ক পরা না থাকলে এর মাধ্যমে কোভিড সংক্রমণ দ্রুত ছড়িতে পড়তে পারে। তবে ওই সময়ের পর আর বাতাসে ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে না ড্রপলেট।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় মাস্ক বিক্রি করছেন জামান মিয়া। তিনি জানান, শুরুতে মাস্কের চাহিদা ও দাম বেশি থাকলেও এখন চিত্র পুরো উল্টো। মাস্ক ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি অনীহা দেখা গেছে রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোতে। মানা হচ্ছে না কোনো সামাজিক দূরত্বও।

আগামীনিউজ/এএইচ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে