Dr. Neem on Daraz
Victory Day

করোনা ট্রাজেডি: শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২০, ১১:০৫ পিএম
করোনা ট্রাজেডি: শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: শিক্ষার অর্জন ধরে রাখতে হলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য বাজেটে বরাদ্দসহ মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোকে সিএস আর (সোস্যাল করপোরেট রেসপন্সেবিলিটি) নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে গণসাক্ষরতা অভিযান।

বুধবার (৩ জুন) প্রাক-বাজেট ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও  তত্ত্বাধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। এর আগে মঙ্গলবার (২ জুন) স্মারকলিপির মাধ্যমে সরকারের কাছে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানায় সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিগত দুই দশকে শিক্ষায় আমাদের অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখার জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে এখনই একটি শিক্ষা পুনরুদ্ধার কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন।  করোনার এসময়ে একমাত্র মোবাইল কোম্পানিগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি। এরা দেশের ৯৬ শতাংশ মানুষের কাছে শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়তুলে ধরতে পারে বিনা খরচে। যেটা তারা করতে পারে তাদের সিএসআরের মাধ্যমে।

শিক্ষা পুনরুদ্ধারে বিশেষ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, করোনা ঝুঁকি প্রশমন ও এডুকেশন রিকভারি কার্যক্রমের আওতায় বর্তমান অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ কমপক্ষে দুই-তিন বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। বিশেষ পরিকল্পনায় পাঠদান, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকদের আশ্বস্ত করা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো বাদ দেওয়া ও পাঠদানের রুটিন সমন্বয় করা আবশ্যক।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী দিনের শিক্ষা হবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। এইজন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যালয় পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত জরুরি। তাই এ খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের বিকল্প নেই। 

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয় করার উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়—বিটিআরসি, এটুআই, আইসিটি বিভাগ, এনসিটিবি, ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংস্থা, মোবাইল অপারেটর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবা প্রদানকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থাপনার একটি সুদৃঢ় ভিত্তি তৈরি করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন।

আইসিটি সহায়ক কারিকুলাম ও টেক্সট বই, শিক্ষা সহায়ক উপকরণ প্রণয়ন ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন ট্যাবলেট বা যুগোপযোগী অন্য কোনও আইসিটি ডিভাইস পায়, সেই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষকের ক্লাসে যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও অংশ নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে ইন্টারনেটের নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ ও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বাড়িয়ে উপবৃত্তি ও স্কুল মিল কার্যক্রম, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাসহ সব পর্যায়ের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীর জন্য তা সম্প্রসারণ করার দাবি জানানো হয়। এছাড়াও প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, চর-হাওর ও উপকূলীয় এলাকা, দুর্গম এলাকা, শহরের বস্তি এবং গ্রামীণ জনপদের শিক্ষার্থীদের বিশেষ চাহিদার মেটাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের সহায়তা ও প্রণোদনা, স্থানীয় পরিকল্পনা ও জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষকদের সুরক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ রাখার দাবির পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেনের জন্য ২ শতাংশ ঋণের ব্যবস্থা রাখারও দাবি জানানো হয়।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও  তত্ত্বাধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য গণসাক্ষরতা অভিযানের সহ-সভাপতি আরমা দত্ত, সহসভাপতি  ড. মনজুর আহমেদ ও উপপরিচালক কে এম নামুল হক,  আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক ড. এহছানুর রহমান, ব্র্যাকের পরিচালক (শিক্ষা কর্মসূচি) ড. শফিকুল ইসলাম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং গণমাধ্যমের কর্মীরা যুক্ত হন।

 আগামীনিউজ/তরিকুল/মিজান

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে