রংপুরঃ নগরীর বুড়ির হাটে দোকান মালিক সমিতি ও ইজারাদার বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
ইজারাদারের বাহিনী কর্তৃক দোকান মালিক সমিতির সভাপতিসহ ৬জনের উপর হামলা, হত্যার চেষ্টা ও মারপিটের ঘটনায় প্রতিবাদ সমাবেশ করে আল্টিমেটাম দিয়ে টোল আদায় বন্ধের নির্দেশ নিয়েছে দোকান মালিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ফলে সেখানে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে।
হঠাৎ বুড়ির হাট দোকান মালিক সমিতির সদস্যদের সাথে ইজারাদারে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির নেপথ্যে ইজারাদারের অতিরিক্ত টোল আদায়, অবৈধ ভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোড় করে টোল আদায়, বুড়িরহাট দোকান মালিক সমিতির নিবার্চনে ইজারাদার হারুন অর রশিদের সমর্থিত প্যানেলের শোচনীয় পরাজয় এবং ইজারাদার হারুন অর রশিদের দীর্ঘ চার বছর থেকে একটানা দখলদারিত্ব এই চারটি কারণ রয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
অন্যদিকে দোকান মালিক সমিতির কয়েকজন নেতা জানান, গত ৫ এপ্রিল বুড়ির হাট দোকান মালিক সমিতির একটি ফেসবুক আইডি থেকে গরুর বাজারের দুটি ভিডিও প্রচার করে সেখানে ‘করোনার কবল গ্রাসে বুড়িরহাট’এই চারটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ এপ্রিল দোকান মালিক সমিতির অফিসের পাশে প্রকাশ্য দিবালোকে ইজারাদার বাহিনীর সদস্য হিরণ, মুকুল, স্বাধীন, জামিল ও মুন্সি নামের কয়েকজন জোট বেঁধে বুড়ির হাট দোকান মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সুরুজ মিয়া ও প্রচার সম্পাদক আবু হোসেনকে মারপিট করেন। প্রতিকার চেয়ে আইনি আশ্রয় নিতে মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানা থেকে ফেরার পথে ৮ এপ্রিল রাত ১১টায় ইজারাদার বাহিনীর সদস্যরা থানা গেটের সামনে আবার বুড়ির হাট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাফিজুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে বহনকারী মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে চাপাতি দিয়ে হামলা চালানো হয়।
এসময় মাইক্রোবাস ও মোটর সাইকেলের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলা হয়। মারধর করে লাঞ্চিত করা হয় দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাফিজুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে। ৯ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকে ইজারাদারে বিচার না হওয়া পর্যন্ত হাট থেকে সকল প্রকার টোল আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দোকান মালিক নেতৃবৃন্দ। বুড়ির হাট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সহ সভাপতি ও জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আলতাব হোসেন, রসিকের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনোয়ারুল ইসলাম লেবু, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান তরু, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা রশিদুস সুলতান বাবলু, ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল, জাহাঙ্গীর আলম, ও সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন চঞ্চল প্রমুখ। এই নিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে বুড়িরহাট এলাকায়।
বুড়ির হাট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল, সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন চঞ্চল ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেনের দাবি, দোকান মালিক সমিতির নেতাদের উপর হামলার ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আজ শনিবার সন্ধ্যায় মিটিং করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
পরশুরাম জোন ও পরশুরাম থানার এলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার জিন্নাহ আল মামুন এ ব্যাপারে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সব সময় মনিটরিং করছি এবং কেউ অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনার সৃষ্টি করলে পুলিশ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আগামীনিউজ/জনী