Dr. Neem on Daraz
Victory Day

রাবির বিদায়ী ভিসিকে জিজ্ঞাসাবাদ, ভিসির দাবি ‘মানবিক’ বিবেচনায় নিয়োগ


আগামী নিউজ | আমানুল্লাহ আমান, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৮, ২০২১, ০৫:৫৬ পিএম
রাবির বিদায়ী ভিসিকে জিজ্ঞাসাবাদ, ভিসির দাবি ‘মানবিক’ বিবেচনায় নিয়োগ

ফাইল ফটো

রাজশাহীঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সদ্য বিদায়ী ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এসময় মানবিক বিবেচনায় ১৪১ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদ ওই তদন্ত টিমকে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

অবৈধভাবে ১৪১ জনকে নিয়োগ দেয়ার ঘটনায় তদন্ত টিম এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথমে রাবির রুটিরকালীন ভিসি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার কার্যালয়ে যায় তদন্ত দল। সেখানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর আব্দুস সালামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ওই দলের সদস্যরা। এ সময় সেখানে অন্য কাউকে ঢুকতে দেয়া হয় নি। এরপর একে একে নিয়োগের কুশীলব সহকারী রেজিস্ট্রার তারিকুল আলম, পরিষদ শাখার কর্মকর্তা মামুন অর রশীদ, সংস্থাপন শাখার প্রধান ইউসুফ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

পরে গাড়ি পাঠিয়ে সাবেক ভিসি অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানকে ক্যাম্পাসে আনা হয় এবং তাকে প্রশাসন ভবনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তদন্ত টিমের সদস্যরা তার কাছ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাইরে আসেন সাবেক ভিসি। এ সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে কথা বলেন অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান। তিনি বলেন, ‘আমি তদন্ত টিমের কাছে বলেছি, এ নিয়োগ যৌক্তিক। নিয়োগ না হলে বিশ^বিদ্যালয় মুখ থুবড়ে পড়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হতো। এছাড়া চাকরিপ্রত্যাশীদের চাপও ছিল।

যদিও ‘মানবিক’ কারনে বিশেষ ক্ষমতাবলে এদেরকে নিয়োগ দিয়েছি, কারো কোনো চাপে নয়।’ তবে ১৪১ জনের মধ্যে মাত্র ৪৫ জন ছাত্রলীগ নেতা নিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ সত্য নয়। ছাত্রলীগ নেতা ছাড়াও আওয়ামী পরিবারের সন্তান, ক্ষমতাসীন দলের অনেক কর্মীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন ইউজিসির সদস্য ও রুয়েটের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। এছাড়াও এ দলে রয়েছেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ ও ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান। গত ৬ মে এ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রাবিতে এই অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন কমিটির সদস্যরা। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত কর্মদিবস সময় পেয়েছেন তারা।

যা আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে:

উপাচার্যের গণহারে অ্যাডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়য়র উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর পত্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়েছিল।

কিন্তু উপাচার্য আজ ০৬.০৫.২০২১ খ্রি. তারিখে তার শেষ কর্মবিদসে মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ প্রদান করেছেন মর্মে মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্ভব, যা অনভিপ্রেত। বিদায়ী উপাচার্য কর্তৃক অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বিধায় এতদসংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলো।

আগামীনিউজ/এএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে