মোবাইলের ক্ষুদে বার্তায় প্রতারনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২১, ২০২২, ১২:০২ এএম
প্রতিকী ছবি

ঢাকাঃ সময়ের সাথে বাড়ছে প্রতারণার ধরন, বাড়ছে প্রতারকের সংখ্যা। দেশব্যাপী সাধারণ মানুষ প্রতারণার ভয়ঙ্কর ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে বিভিন্ন পন্যের লোভনীয় অফারে কথা বলে নিম্নমানের পন্য দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, মোবাইলে লটারি জেতার কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ আদায়সহ প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। র‌্যাব-পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এসব বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করলেও এর মাঝেই প্রতারকচক্র তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রতারণায় একাধিক দেশি চক্র সক্রিয়। এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে সবাইকে। অন্যথায় প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়া যেতে পারে।

হটাৎ করেই দেখা যায় মোবাইলে অপরিচিত নাম্বার থেকে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। অপর পক্ষ থেকে বলা হল আপনি অনেক ভাগ্যবান। আপনি লটারিতে মোবাইল, গাড়ি অথবা টাকা পেয়েছেন বলে জানায় প্রতারক চক্র। তবে তাদের প্রাপ্ত সম্পদ পেতে হলে রেজিস্ট্রেশন ফি বা ব্যাংকের ভ্যাট দিতে হবে বলে টাকা চাওয়া হয়।

এমনি একটি ফোন আসে এক সরকারি কর্মকর্তার কাছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা আগামী নিউজকে জানান, হঠাৎ তাঁর মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। সেখানে বলা হয় আপনি অনেক ভাগ্যবান। আপনি একটি লটারিতে Samsung GALAXI j7 মডেলের একটি মোবাইল হ্যান্ডসেট(মোবাইল ফোন)জিতেছেন। পরবর্তীতে সেই নাম্বারে কল করা হলে নানা রকম ভ্রান্ত তথ্য দিতে থাকেন ঐ ফোনের ব্যক্তিটি।

আবার মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে প্রতারক চক্র লোভনীয় অফারে পন্য বিক্রির কথা বলে বিকাশে নিদিষ্ট অংকের টাকা নিয়ে সেই মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে, কখনও বা নকল ও নিম্ন মানের পন্য পাঠিয়ে থাকে । দিনাজপুরের একজন ভুক্তভোগীর অভিমত তিনি একটি পাওয়ার ব্যাংক কিনেছিলেন। তার মধ্যে একটা পুরাতন ব্যাটারি দিয়েছিল। আবার ভেতরে পানির গ্লাস দিয়ে রেখেছে। যাতে ওজন হয়। এ ধরনের প্রতারণার কথা চিন্তায়ও আসে না যেটা তারা হামেশাই করে যাচ্ছে।

সম্প্রতি মোবাইলে ক্ষুদে বার্তায় একটি প্রতারক চক্রের প্রতারণার স্বীকার হয় নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে এক প্রতারক তাঁর কাছ থেকে প্রথমে ৮ হাজার টাকা নেন। পরে ঐ জ্বীনের বাদশার কাছে তিনি আরও ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হারান। প্রতারক ওই ব্যক্তির সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

কোম্পানিগুলো বলছে, এ ধরণের ক্ষেত্রে তাদের করণীয় কিছু নেই।  একজন গ্রাহক আরেকজন গ্রাহককে কী ধরণের বার্তা দেয় সেটি কোম্পানিগুলোর দেখার সুযোগ নেই। তাই তারা মনে করে গ্রাহকদের সচেতনতাই এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানির সিম থেকে সাম্প্রতিক সময়ে লোভনীয় এসএমএস ও বিভিন্ন ধরনের পুরস্কারের কথা বলে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর সচেতনামূলক এসএমএস দিয়ে মোবাইল গ্রাহকদের সচেতন করতে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আগামীনিউজ/শরিফ