উইঘুর মুসলিমদের জোরপূর্বক জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে চীন, যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ৩০, ২০২০, ১১:০২ এএম

ঢাকা : উইঘুর এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের বিরুদ্ধে জোর করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করা এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিসিপি)কে দমন-প্রচার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সোমবার টুইট করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। টুইটে লেখেন, আমরা আজ কীভাবে আচরণ করব তা ইতিহাস বিচার করবে।

পম্পেও জানান, জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত নিপীড়নে এটাই প্রমাণ হয় যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) মানুষের জীবন এবং মৌলিক মর্যাদার প্রতি সম্মান রাখে না।

এদিকে, নতুন এক তদন্তে দেখা গেছে, মুসলমান জনসংখ্যা সীমিত রাখতে উইঘুর নারীদের বিস্তৃত ও কাঠামোগতভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি হাজার হাজার নারীকে গর্ভপাতেও বাধ্য করা হচ্ছে।

খবরে বলা হয়, চীনের আঞ্চলিক সরকারি উপাত্ত, নীতিমালা বিষয়ক নথিপত্র ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর নারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে চীনা গবেষক অ্যাড্রিয়াল জেনজ। জেনজ তার প্রতিবেদন তৈরিতে চীনের ইন্টারনেটে বিদ্যমান সরকারি তথ্য ব্যবহার করেছেন। 

প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর শিনজিয়াংয়ে চীনের নীতিমালা নিয়ে তদন্ত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আইনপ্রণেতাদের একটি দল। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ক সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে। 

এর আগেও জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের গর্হিত নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে। জিনজিয়াংয়ে কয়েক লাখ উইঘুর মুসলিমকে শিবিরে আটকে রেখে নির্যতন করা হয়।

জেনজের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে নারীদের সর্বোচ্চ দুটি সন্তান জন্মদানের বৈধতা রয়েছে। যেসব নারীদের সন্তানের সংখ্যা এর চেয়ে কম তাদের জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ গ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেক নারী জানিয়েছেন, তাদের স্টেরিলাইজেশন সার্জারি করাতে বাধ্য করা হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধের ক্ষেত্রে নানান পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে জেনজ তার প্রতিবেদনে লিখেন, প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের বাধ্যতামূলক গাইনি পরীক্ষা দিতে হয় ও প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকে গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করাতে হয়।

এদিকে, উত্তর আমেরিকান, ইউরোপিয়ান ও অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্ট সদস্যদে নিয়ে গঠিত চীন বিষয়ক জোট ‘ইন্টার-পার্লামেন্টারি এলায়েন্স অন চায়না (আইপেক)’ জানিয়েছে, তারা শিনজিয়াংয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ বা গণহত্যা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চালু করতে আইনি পদক্ষেপ নেবে। সূত্র : ইয়ন, বিবিসি
আগামীনিউজ/এসপি