শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংকটের প্রথম পর্ব শেষ!

আলী জামান জুলাই ১৪, ২০২২, ০৮:৪১ এএম
প্রেসিডেন্টের বাড়িতে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা

ঢাকাঃ জন বিক্ষোভের কারনে প্রেসিডেন্ট আর প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট সেনা সহায়তায় দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। শ্রীলঙ্কার বর্তমান সংকট উভয়বিধ। এর মধ্যে যেমন আছে, অর্থনৈতিক সংকট, তেমনি রয়েছে ভূ- রাজনৈতিক সংকট। শ্রীলঙ্কার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারনে, ভারত-চীন এমনকি আমেরিকাও সেখানে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। আপাতত শ্রীলঙ্কার প্রধান সংকট অর্থনৈতিক। একদিকে বিপুল অংকের বৈদেশিক ঋণ, অন্যদিকে সেই ঋণ পরিশোধের জন্য নিজেদের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা না থাকা বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ কিনতে পারছে না তারা। এই অর্থনৈতিক সংকটের আপাতত কোন সুরাহা তাদের হাতের কাছে নেই। ভারত, চীন মানবিক বিবেচনায় কিছু সাহায্য সহযোগিতা করলেও, মূল সমস্যা বৈদেশিক ঋণের সুদসহ কিস্তি পরিশোধের জন্য আইএমএফই একমাত্র ভরসা। আর সবাই জানেন যে, আমেরিকা আর ইউরোপ না চাইলে আইএমএফ এগিয়ে আসবে না। চীন এককভাবে এই ঋণের সংকট থেকে শ্রীলঙ্কাকে উদ্ধার করে দিতে পারতো। অজ্ঞাত কারনে তারা সেইটা করছে না। যদিও এর আগে আর্জেন্টিনা আর পাকিস্তানের ঋণ পরিশোধে তারা ভুমিকা রেখেছিল।

শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের ৪৭% ইউরো বন্ডে (বিদেশে বন্ড ছেড়ে) নেয়া। চীন ও জাপানের থেকে নেয়া ঋণ ১০% করে। ভারতের কাছ থেকে ৩%। হাম্বান্টোটা বন্দরের ঋণ, সমুদ্র থেকে ভূমি উদ্ধার করে নতুন শহর গড়ার মেগা প্রকল্পের জন্য নেয়া ঋণও এই ১০% এর মধ্যেই। বর্তমানে ৯৯ বছর মেয়াদী এক চুক্তির মাধ্যমে হাম্বান্টোটা বন্দরের ব্যবস্থাপনার ৭০% চীনা কোম্পানির কাছে, আর ৩০% শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছে রাখা আছে, যা অলঙ্ঘনীয়।

ভূ-রাজনৈতিক কারনে আমেরিকা ভার‍তের সহযোগিতা নিয়ে- শ্রীলঙ্কাকে নিজ বলয়ে রাখার চেষ্টা করবে, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু চীন তা সহজে মানবে কেন? শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, ২০ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন সরকার গঠন হবে। বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসা ছাড়া সাংবিধানিক আস্থাভাজন কাউকে এখনো সামনে দেখা যাচ্ছে না। অবশ্য একটা ভরসার জায়গা এখনো আছে। তা হলো, ওদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবারের সংকট উত্তরণে মুখ্য ভুমিকায় রয়েছে। তাদের উপর দেশটির মানুষের আস্থা প্রায় শতভাগ বিদ্যমান আছে।

এমবুইউ