রাজধানীতে ৩০০ টাকায় কোরবানির মাংস!

ডেস্ক রিপোর্ট জুলাই ১১, ২০২২, ১১:১৩ এএম

ঢাকাঃ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বিত্তবানদের বাড়ি থেকে সারা দিন ঘুরে ঘুরে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করেছেন তারা। নিজেদের প্রয়োজন মতো মাংস রেখে সন্ধ্যায় বাকি মাংস বিক্রি করে দেন। তাদের কাছ থেকে মাংস কেনেন ঢাকা শহরের নিম্ন মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। দিনশেষে তারা এসব মাংস স্বল্প দামে কিনে ঘরে ফেরেন। রাজধানীর এ সব বাজারে রকমভেদে মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত।

খিলগাঁও রেলগেটের সামনে কয়েক ভাগ মাংস নিয়ে বসেছেন রহিম মিয়া। কুড়িয়ে পাওয়া মাংস নয়, বিভিন্ন বাসায় কোরবানির মাংস কাটার পর নিজের ও দলের ভাগ একত্রিত করে বিক্রির জন্য বসেছেন। তার বাড়ি রংপুর। এত মাংস নেয়া সম্ভব না, তাই বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। দাম কেমন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘৩০০ টাকা কেজি, কিছু কমাইয়া হইলেও দিয়া দিমু।’

ঈদের দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস সংগ্রহ করেন নিম্ন আয়ের মানুষ। দিন শেষে তারাই আবার খাওয়ার জন্য কিছু মাংস রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এই মাংস পাওয়া যায় যা অনেকের কাছে গরিবের মাংসের হাট নামে পরিচিত।

রাজধানীর মগবাজার রেলগেট, বাংলামটর, হাতিরপুল, মৌচাক, খিলগাঁও ফ্লাইওভারসংলগ্ন রেলগেট, রামপুরাসহ বিভিন্ন মোড়ে এমন হাটের দেখা মেলে। সেখানে মাংস আসা শুরু হয় বেলা ৩টার পর, যা চলবে রাত অবধি।

সাধারণত নিম্নবিত্তরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করেন এসব মাংস। আবার অনেকেই মৌসুমি কসাই। কাটাকাটির পর সেখান থেকে মাংস পেয়েছেন তারা। কেউ আবার টাকার বদলে মাংস নিয়েছেন। এসব মাংসই বিক্রি হচ্ছে অস্থায়ী এসব বাজারে।

মগবাজার রেলগেটে বসা কয়েকজন মাংস বিক্রেতার কাছে মাংস কিনছেন একটি হোটেলের ম্যানেজার। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই কোরবানি ঈদে হোটেলের জন্য এসব মাংস সংগ্রহ করি। দামে কম হওয়ায় এসব মাংস কেনা লাভজনক।’

রিকশাচালক মো. বাদল কিনতে এসেছেন মাংস। তিনি বলেন, ‘আমাগো মতো গরিব মাইনষে তো এত টাকা দিয়া গোস্ত কিনতে পারব না। এসব হাট থাইকাই মাংস কিনি।’

মাংস বিক্রি হচ্ছে দুইভাবে। ব্যাগ হিসেবে প্যাকেজ অথবা কেজি দরে। প্রতিকেজি মাংসের দাম হাঁকা হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। আর হাড় ছাড়া বা খুব কম হাড়ওয়ালা মাংসের দাম আরও বেশি। শুধু মাংস নয়, এসব বাজারে ভুঁড়ি, পা, আস্ত মাথা বা মাথার মাংসও বিক্রি হচ্ছে।

ভাসমান কোরবানির মাংসের হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিনও কোরবানির মাংস এসব ভাসমান হাটে বিক্রি হয়। ঈদের দ্বিতীয় দিনও অনেকে রাজধানীতে পশু কোরবানির দেন এবং গরিব-দুঃখী মানুষদের মধ্যে বিলি করেন। এসব মাংস কেজি হিসেবে বিক্রি করা হলেও তা ওজন করে বিক্রি করা হয় না। চোখের পরিমাপে এক কেজির ধারণা করে বিক্রি করা হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে।

এমবুইউ