ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৈঠকে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ আটটি এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে ইসি। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রের বাইরে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করবে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবসহ আইনশৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর প্রধান এবং দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই সিটি নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করবে।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের এজেন্ডাগুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচন পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় স্থির করা, চিহ্নিত অপরাধী ও নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টকারী সম্ভাব্য দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
সূত্র জানায়, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে নিরাপত্তা পরিকল্পনায় দেখা গেছে- প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র কতটি তা নির্ধারণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আর ভোটকেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তার বিষয়ে কার্যপত্রে ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও এপিবিএন সমন্বয়ে ৫৪টি মোবাইল ও ১৮টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাবের ৫৪টি টিম ও ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭৫টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও এপিবিএন সমন্বয়ে ৭৫টি মোবাইল ও ২৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাবের ৭৫টি টিম ও ৩৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সংখ্যা কমবেশি করার কথাও বলা হয়েছে কার্যপত্রে।
আরো উল্লেখ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটের দুদিন আগ থেকে পরের দিন পর্যন্ত চার দিন এবং আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবে। ভোটের আগের রাতে কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওই কেন্দ্রেই অবস্থান করতে হবে। প্রতিটি সিটি করপোরেশনে নির্ধারিত স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক টহল দল এবং ৩-৪ প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স সংরক্ষিত রাখার জন্য বলা হয়েছে।
ভোটগ্রহণ উপলক্ষে দুই সিটিতে ১২৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৬৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করার প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। দুই সিটিতে আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন। তারা আচরণবিধি প্রতিপালন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবেন। আর ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৭ জন ও দক্ষিণ সিটিতে ৩৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তারা ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবেন। তারা নির্বাচনবিধি ও ফৌজদারি কার্যবিধি প্রতিপালন করবেন।
আগামীনিউজ/হাসি/এনএনআর