জন্মদিনে রাষ্ট্রপতিকে শি জিন পিংয়ের শুভেচ্ছা

আগামী নিউজ ডেস্ক জানুয়ারি ১, ২০২৩, ০৪:০২ পিএম

ঢাকাঃ ৮০ বছরে পা দিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। জন্মদিন উপলক্ষে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি আবদুল হামিদের সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনা করেন।

১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতার নাম মরহুম হাজী মো. তায়েব উদ্দিন এবং মাতার নাম মরহুমা তমিজা খাতুন।

আবদুল হামিদকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে এবং উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে এক সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জের নিকলি উপজেলার নিকলী জি সি হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে আইএ ও বিএ ডিগ্রি এবং ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত হন। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু ১৯৫৯ সনে তৎকালীন ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৬১ সনে তিনি ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় আইয়ূববিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৬২ সনে তিনি হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরোধীতা করেন এবং ওইসময় ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাকে কারারুদ্ধ করেন।

১৯৬২-৬৩ সালে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ১৯৬৫-৬৬ সালে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপিত এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের কারণে ১৯৬৮ সালে আবারও কারাবরণ করেন।

১৯৬৯ সালের শেষ পর্যায়ে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। একাত্তরের মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে কিশোরগঞ্জে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেন।

আবদুল হামিদ ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে, ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচন হন।

সপ্তম জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ১৩ জুলাই ১৯৯৬ থেকে ১০ জুলাই ২০০১ পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ১২ জুলাই ২০০১ থেকে ২৮ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি ২০০১ সালের ১ নভেম্বর থেকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি সর্বসম্মতিক্রমে স্পিকার নির্বাচিত হন এবং সফলভাবে এ দায়িত্ব পালন করেন।

২২ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।

আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় মেয়াদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২৪ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি তিন পুত্র ও এক কন্যার জনক।

বুইউ