র‍্যাবের ওপর হামলা

চনপাড়া বস্তির আলোচিত ‘মেম্বার’ গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৮, ২০২২, ০৫:৫১ পিএম
আলোচিত মেম্বার মো. বজলুর রহমান

র‍্যাব সদস্যদের ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া বস্তির আলোচিত মেম্বার মো. বজলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে তাকে চনপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর চনপাড়া একালার কায়েতপাড়ায় অভিযানে গেলে র‌্যাবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় চনপাড়া বস্তির আলোচিত মেম্বার বজলুকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

র‍্যাব জানায়, গত ১০ নভেম্বর রাতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিটি শাহীন নিহত হয়। সিটি শাহীনের সব অপকর্মের সেল্টারদাতা ছিলেন বজলু মেম্বার। এছাড়া র‍্যাবের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেন বজলু।

সম্প্রতি চনপাড়া সরেজমিনে এ প্রতিবেদক জানতে পারেন-নিহত সিটি শাহীনের একটি বড় অপরাধ বাহিনী রয়েছে এলাকায়। তিনি ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চনপাড়া মাদক নির্মূল কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। হামলা-নির্যাতনের ভয়ে শাহীন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস নেই কারও। প্রায় পঞ্চাশাধিক নারী, পুরুষ ও তরুণের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিকাংশই জানান, চনপাড়ায় হয় না এমন কোনো কিছু নেই। চনপাড়ায় রাতকে দিন আবার দিনকে রাত বানিয়ে দেওয়া যায়। এখানে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের নিয়ন্ত্রণে পুরো বস্তিবাসী। বস্তিতে কোনো অনুষ্ঠান করতে গেলেও লাগে প্রভাবশালীদের অনুমতি। তাদের কথা না শুনলে চলে নির্যাতন ও চাঁদাবাজি।

স্থানীয়রা জানায়-বজলুর ভয়ে চনপাড়ায় কারো মুখ খোলার সাহস নেই। বজলুসহ তার চার ভাই নিয়ন্ত্রণ করে পুরো চনপাড়া বস্তি। সঙ্গে রয়েছে কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এসব অপরাধীরা দিনে-দুপুরে মাদক কারবারি, মারধর ও খুনসহ নানা অপরাধে জড়িত।

বস্তির লোকজন বজলু ও তার লোকদের বিষয়ে ভয়েও মুখ খোলে না। কথিত আছে-বজলুর কথা ছাড়া সেখানে পাতাও নড়ে না। তার নামে ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হয় বস্তির শিশুদের। বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ খুনের জেরে আলোচনায় এসেছে চনপাড়া বস্তির নাম।

বজলুর নামে কেবল রূপগঞ্জ থানাতেই হত্যা, অস্ত্র, মাদকের মামলা মিলিয়ে ১২টি মামলা রয়েছে। অস্ত্র ও খুনের মামলায় একসময়ের জেলখাটা বজলু এখন নাম লিখিয়েছিলেন সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তির খাতায়।

এসএস