অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জানাতে নির্দেশ

আদালত ডেস্ক ডিসেম্বর ৬, ২০২১, ০৩:৪৮ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও সিআইডিকে তা জানাতে বলা হয়েছে।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

শুনানিতে আদালত বলেন, দেশের অর্থপাচার বন্ধে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আমরা কেউ চাই না এতো রক্ত দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে দুর্নীতি হোক। যেভাবে অর্থপাচার হচ্ছে, আমাদের তো মাঝে মাঝে ঘুম হয় না। আমরা কেউ বসে থাকতে পারি না। কাউকে না কাউকে কাজ করতে হবে।

আদালত আরও বলেন,আমাদের দেশে দুর্নীতিবিরোধী কোনো সংগঠন নেই। ভারতে আছে, তারা মানববন্ধন ও আন্দোলন করেন। আমরা কেউই চাই না, এতো রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে দুর্নীতি হোক।

এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এমন প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে জানান দুদকের আইনজীবী। রোববার এ বিষয়ে শুনানি না করে আজ সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) শুনানির জন্যে দিন ধার্য রেখেছেন আদালত।

হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

তালিকায় থাকা ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান 

১. আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মাল্টিমোড লি., অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।

২. মিজ নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, মাল্টিমোড লি., অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।

৩. তাবিথ আউয়াল, মাল্টিমোড লি., অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।

৪. তাফসির আউয়াল, মাল্টিমোড লি., অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।

৫. তাজওয়ার মো. আউয়াল, মাল্টিমোড লি., অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।

৬. মোগল ফরিদা ওয়াই, ৮০-৭২, তাইরন পিআই, জ্যামাইকা, নিউইয়র্ক, ইউএসএ।

৭. শহিদ উল্লাহ, ২৩৫, স্যাডল রজি পেলস, দ্য উড ল্যান্ডস, টেক্সাস, ইউএসএ।

৮. চৌধুরী ফয়সাল, বাড়ি # ২৩, রোড# ২৩, ব্লক-বি, বনানী, ঢাকা।

৯.আহমাদ সামির, অ্যাপার্টমেন্ট # ৪বি, ১৫ ইউনাইটেড নেশানস রোড, বারিধারা, ঢাকা।

১০. ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লি., ৫০ মহাখালী বা/এ, ঢাকা।

১১. মুসা বিন শমসের, ভেনাস ওভারসিজ কোং, হোল্ডিং ব্লক-আই, বনানী, ঢাকা।

১২. ফজলে এলাহী, ডাইনামিক এনার্জি, হোল্ডিং বাড়ি # ৪২৪, রোড # ০৭, বারিধারা ডিওএইচএস, ঢাকা।

১৩. কেএইচ আসাদুল ইসলাম, ইন্ট্রিপিড গ্রুপ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

১৪. জুলফিকার আহমেদ, খালেদা শিপিং কোম্পানি, বাড়ি # ১৩২, রোড # ০৫, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা।

১৫.  তাজুল ইসলাম তাজুল, জেমিকো ট্রেড ইন্টা. চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।

১৬. মোহাম্মদ মালেক, বেঙ্গল শিপিং লাইনস, ১০১ আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।

১৭.  ইমরান রহমান, ওসান আইস শিপিং কোম্পানি, ইপিজেড ঢাকা ।

১৮. মোহাম্মদ এ আউয়াল, শামস শিপিং লি., ৭৭, মাওলানা শওকত আলী রোড, লালখান, চট্টগ্রাম।

১৯. এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ডব্লিউএমজি লি. বাড়ি # ১৪, রোড # ১৩, সেক্টর # ৪, উত্তরা, ঢাকা।

২০.  ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপ, বাড়ি # ৫, রোড # ৫১, গুলশান, ঢাকা।

২১. তাজুল ইসলাম, জেমিকো ট্রেড ইন্টা., বালুর মাঠ, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।

২২. আমানুল্লাহ চাগলা, পদ্মা টেক্সটাইল, বাড়ি # ৪৫৮, লেন-৮, ডিওএইচএস, বারিধারা ঢাকা।

২৩. মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্ট, মস্কো, রাশিয়া।

২৪. মোহাম্মদ রেজাউল হক, মাল্টা।
 
২৫. মোহাম্মদ কামাল ভুইয়া, তুহিন-সুমন, জেমিকো ট্রেড ইন্টা:, বালুর মাঠ, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।
 
২৬. মাহতাবা রহমান, সেলকন শিপিং কোম্পানি, বাড়ি # ৮৭এ, রোড # ০৬, ডিওএইচএস, বনানী, ঢাকা।

২৭. ফারুক পালওয়ান, জেমিকো ট্রেড ইন্টা, নারায়ণগঞ্জ।
 
২৮. মাহমুদ হোসাইন, গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেম, আয়ারল্যান্ড। 

২৯. শাহনাজ হুদা রাজ্জাক, সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানি, ঢাকা ইপিজেড।

পানামা পেপার্সে নাম আসা দুদকের দাখিল করা তালিকায় থাকা ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী, সেতু করপোরেশনের পরিচালক উম্মে রুবানা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিডব্লিউএন (এ) আজমত মঈন, বনানীর সালমা হক, এস এম জোবায়দুল হক, বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার সৈয়দ সিরাজুল হক, ধানমন্ডির দিলীপ কুমার মোদি ও শরীফ জহির, গুলশানের তারিক ইকরামুল হক, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, পরিচালক খন্দকার মঈনুল আহসান শামীম, পরিচালক আহমেদ ইসলাইল হোসেন ও পরিচালক আখতার মাহমুদ।

উল্লেখ্য, কানাডার ‘বেগমপাড়া’র বিষয়টি আলোচনায় আসার আগে, গত বছরের ২২ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে দুদক কমিশনের মহাপরিচালক (অর্থপাচার) আ ন ম আল ফিরোজ এক চিঠিতে বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার করে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের তালিকা চান।

এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয় যে, বেগমপাড়ায় ২৮ বাংলাদেশির বাড়ির খোঁজ পেয়েছে সরকার। যার মধ্যে বেশিরভাগের মালিক সরকারের উচ্চপদস্থ আমলা। তাদের নামের তালিকা খোঁজ করছে দুদক। তালিকা হাতে পেলেই তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আগামীনিউজ/বুরহান