গাঁদা

ডঃ নিম হাকিম ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১, ০৬:৫৪ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

পরিচিতিঃ (Botanical Name: Tagetes erecta Linn, Common Name: Genda, English Name: Marigold, Family: Compositae)

গাঁদা গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এটি ১.0 সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতা বহু খন্ডে বিভক্ত, এবং পত্রকের ধার করাতের মত খাঁজ কাটা। গাছে ও পাতায় সূক্ষ্ম লোম ও একটি ঝাঁঝালো গন্ধ আছে। সাধারণতঃ অঞ্চল ভেদে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত হলুদ থেকে কমলা রঙের ফুল হয়।

প্রাপ্তিস্থানঃ উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে গাঁদা ফুলের আদি নিবাস মেক্সিকোর গোন্ডামেরীতে। সারা পৃথিবীতে গাদার ২০ টি প্রজাতি দেখা যায়।

চাষাবাদঃ শীতকালে ফুল হয় এবং শীতের শেষে ফুলের বীজ পাকে, এটি সংরক্ষণ করে জুন-জুলাই মাসে বীজ দিয়ে নতুন চারা উৎপাদন সম্ভব। তবে ভালো ও বড় ফুল গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়া গাছের কান্ডের মাধ্যমে বংশ বিস্তার হয়। এক্ষেত্রে মোটা ডাল থকে ছোট ছোট শিকড় বের হয়, এসব ডাল কেটে মাটিতে পুঁতলে নতুন গাছ হয়ে যায়। কাটিং নেওয়ার সময় দেখতে হবে তাতে ফুল যেনো ভালো হয়।

লাগানোর দূরত্বঃ দেড় থেকে দ’ফুট দূরত্বে চারা কিংবা কাটিং লাগাতে হয়।

উপযোগী মাটিঃ সব ধরনের মাটিতে গাঁদা জন্মে থাকে।

বীজ আহরণঃ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে এবং ফেব্রুয়ারী মাসে বীজ সংগ্রহ করা হয়।

প্রতি কেজিতে বীজের পরিমাণঃ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বীজ সংগ্রহ করা হয়।

প্রক্রিয়াজাতকরণ সংরক্ষণঃ গাঁদা সাধারণত কাঁচা অবস্থায় ব্যবহার করা হয়।

ব্যবহার্য অংশঃ পাতা ও ফুলের পাপড়ি।

উপকারিতা/লোকজ ব্যবহারঃ কোথাও কেটে গেলে রক্ত বন্ধ করতে, সুতাকৃমি ও পেটের সমস্যায় গাঁদা ফুল উপকারি।

কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয়ঃ

  • রক্ত আমাশয়, রক্তার্শে, চোখ লাল হলে, কান ব্যাথায়, ফোঁড়া পাকাতে এবং শরীরে পাঁচড়া হলে গাঁদা ফুলের এবং পাতার রস বিশেষভাবে উপকারি।
  • কানের ব্যথায়-গাঁদা পাতার রস কানে দিলে ব্যথা দূর হয়।
  • কোথাও কেটে গেলে-গাঁদা পাতার রস লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
  • কোথাও ঘা হলে-গাঁদা পাতার রস ক্ষতস্থানে লাগালে ঘা সেরে যায়।

পরিপক্ক হওয়ার সময়কালঃ সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাসেই গাঁদা গাছে ফুল আসে।

অন্যান্য ব্যবহারঃ সাধারণত বাগানের শোভা বৃদ্ধির জন্য গাঁদা লাগানো হয়ে থাকে। আমাদের দেশে গাঁদা ফুলের বিশেষ ব্যবহার দেখা যায় বিয়ের সময়। গায়ে হলুদে ঘর সাজানো থেকে শুরু করে কনে সাজানো পর্যন্ত গাঁদা ফুলের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়া, গাছ পশু খাদ্য ও শুকনো গাছ জালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায়। সম্পূর্ন গাছ পানিতে থেতলিয়ে ফসলের কীট বিতারক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

আয়ঃ প্রতি একর জমিতে ফুল বিক্রি করে বছরে ৪০,০০০ টাকা থেকে ৫০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।

আগামীনিউজ/নাসির