পীরগাছায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে গরু-ছাগলের হাট

একরামুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি: জুলাই ৩০, ২০২১, ০৯:২৯ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

রংপুরঃ দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণরোধে দফায় দফায় লকডাউন বাড়ানো হলেও মানুষের মাঝে নেই সচেতনতা। যেন স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।

রংপুরের পীরগাছা বাজারগুলোতে দেখা গেছে এমন চিত্র। সরকারি নিদের্শ অমান্য করে প্রকাশ্যে রাস্তার ধারে উপজেলার দেবী চৌধুরাণী পশুর হাট বসানোর অভিযোগ উঠছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই হাট বসান ইজারাদার তৌহিদুল ইসলাম তুহিন।

বৃহস্পতিবারও জমজমাট ভাবে বসানো হয় হাট। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুটি ছবি পোস্ট করার এক ঘন্টার মধ্যে হাটে হাজির হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় পুলিশ ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট দেখে হাট থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান ক্রেতা-বিক্রেতারা। মুহুর্তে ফাঁকা হয়ে যায় গোটা হাট। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দেবী চৌধুরাণীর হাটে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

জানা যায়, রংপুর অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী হাটগুলোর মধ্যে অন্যতম দেবী চৌধুরাণীর হাট। সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার বসে পশুর হাট। সেখানে আশপাশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা থেকে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ জমায়েত হয়। গরু-ছাগল ওঠে কয়েক শতাধিক। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। সরকারি নিদের্শনায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব পশুর হাট।

কিন্তু সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বসানো হয় পশুর হাট। দুর-দুরান্ত থেকে গরু-ছাগল নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। হাটে আসা বেশির ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক না থাকাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই ছিল না। কঠোর লকডাউনেও গাদাগাদি করে জমজমাট পশুর হাটে দুটি ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। এ খবর পেয়ে বিকালে হাটে উপস্থিত হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ভয়ে গরু-ছাগল নিয়ে হাট থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান বিক্রেতারা। মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় হাট।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে হাটের ইজারাদার তৌহিদুল ইসলাম তুহিনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ তাকী তাজওয়ার। এছাড়া একই দিনে বিধিনিষেধ অমান্য করায় উপজেলা সংলগ্ন বটতলা এলাকায় দুজনকে এক হাজার টাকা, নেকমামুদ বাজারে একজনকে ২শ এবং পীরগাছা রেল ষ্টেশন সংলগ্ন দই-চিড়া দোকানে ৩শ টাকা জরিমানা করা হয়।

চৌধুরাণী হাটের ইজারাদার তৌহিদুল ইসলাম তুহিন বলেন, আমরা নিষেধ করেছি। মানুষ গরু-ছাগল নিয়ে আসলে কি করবো। তবুও আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্ট করছি।  

এ বিষয়ে সামাজিক সংগঠন নিয়ে কাজ করা হিমাংশু বর্মন হৃদয়, লোকমান আলম, জয়নাল আবেদীন, নুর আলম সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ইজারাদারের ক্ষমতার জোর বলে কথা। সরকারি নিদের্শনা না মানা একটা ধৃষ্টতা। এর আগেও তিনি জরিমানা দিয়েছেন। সরকারি আইন বলে তার কাছে কিছু নেই। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আরেফীন বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে জনগণকে বিভিন্নভাবে সচেতন ও সতর্ক করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।