ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডব

কলাপাড়ায় পানিবন্দী হাজারো মানুষ

রাসেল কবির মুরাদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি মে ২৭, ২০২১, ০৮:২৭ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

পটুয়াখালীঃ জেলার কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে পনিবন্দী হাজারো মানুষ, তিনদিনেও উনুনে জ্বলেনি আগুন । ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্নিমার প্রভাবে টিয়াখালী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু কলোনীর পানিবন্ধি মরিয়ম বেগম বলেন, বাবারে কাইল খাইছি খিচুরি, আইজ খামু কি? ঘরের মধ্যে জোয়ারের পানিতে তলাইয়া রইছে। তিন দিন ধইর‌্যা রান্দার কাম বন্ধ। চুলা তলাইয়া রইছে। ঘরে স্বামী প্যারালাইসে বিছানায় পইর‌্যা আছে। রাইত হইলে নাতিডারে কেলে লইয়া বইয়া থাহি। জোয়ারের পানি নামলে মোরা ঘুমাই। কলোনীর ১৯৬টি পরিবারের একই অবস্থা।

কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৫শত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রন বেড়িবাঁধ ঘুর্নিঝড় ইয়াস ও পূর্নিমার প্রভাবে নতুন করে আটটি পয়েন্টে ভেঙ্গে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২টি ইউনিয়নের ৭৬টি গ্রামের ১৪ হাজার ৭১০টি পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পরেছে। এসব পানিবন্ধি পরিবারের বাড়ি-ঘর জোয়ারের সময় কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে থাকে, ভাটার টানে পানি  কমতে না কমতেই পরের জোরে আবার তা তলিয়ে যায়। এভাবেই গত তিন দিন ধরে পানি বন্ধি অবস্থায় রয়েছে উপকূলবর্তী কলাপাড়ার
লক্ষাধিক মানুষ।

টিয়াখালী ইউপি সদস্য সোবাহান বিশ্বাস বলেন, বঙ্গবন্ধু কলোনীর বেড়িবাঁধ টপকিয়ে প্রতিদিন দুই দফায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ১৯৬টি পরিবার বর্তমানে পানি বন্ধি অবস্থায় রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এক বেলা রান্না করা খাবার দেয়া হয়েছে।

লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ারের ভাংগা বেরিবাধ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর জোয়ারে পানি প্রবেশ করে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে রয়েছে  পুকুর, মাছের ঘের সহ ফসলি জমি। অধিকাংশ বাড়ির উনুনে হাড়ি ওঠেনি। এছাড়া নতুন করে আরো বেড়িবাঁধ ভাংগার আশংকা দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

কলাপাড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক গনমাধ্যমকে বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে  শুকনা খাবারের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এ এলাকায় শিশু খাদ্যের জন্য ১ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য আরও ১ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারনের পর আরও আড়াই লাখ টাকা দেয়া হয়।