পেলের মৃত্যুতে ব্রাজিলে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক

ক্রীড়া ডেস্ক ডিসেম্বর ৩০, ২০২২, ১১:৫২ এএম

ঢাকাঃ ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ৮২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘ফুটবল সম্রাট’। পেলের মৃত্যুতে ব্রাজিল সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। তাছাড়াও ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন সাত দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

ফুটবল কিংবদন্তি পেলের গত এক মাসের মতো সময় কেটেছে হাসপাতালে। ২০২১ সাল থেকে কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছিল ফুটবল সম্রাটের। নিয়মিত কেমোথেরাপি নিতেন তিনি। সুস্থ হয়ে ফিরেও আসতেন পেলে। তবে এই বার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রথমবারের মত আতঙ্ক ঘিরে ধরে ফুটবল ভক্তদের মাঝে। তবে পরিবার থেকে জানানো হয়, নিয়মিত পরীক্ষার জন্যই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তবে এর মাঝেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় আইসিইউতে। এরপরই বাড়ে উৎকণ্ঠা।

ব্রাজিলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভার পেলের মৃত্যুতে জানান, ‘আমার জীবনের বড় পাওয়া, আমি পেলেকে খেলতে দেখেছি, পাচায়েম্বু ও মোরুম্বিতে তাকে জীবন উপভোগ করতে দেখেছি। যা আজকের তরুণ ব্রাজিলিয়ানরা পায়নি। আমি দেখতাম, পেলেকে মাঠে একটা দারুণ শো উপহার দিতে। কারণ, যখন সে বল পেত, সবসময়ই বিশেষ কিছু করত সে, যা প্রায় সময়ই গোল দিয়ে শেষ হতো।’

ইনাসিও লুলার এই বার্তার কিছুক্ষণ পরেই দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এদিকে ফুটবল সম্রাটের মৃত্যুতে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের (সিবিএফ) সভাপতি এডালান্ডো রডরিগেজ আগামী সাত দিন শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। এক বিবৃতিতে সিবিএফ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘পেলের প্রয়াণে মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। সর্বকালের সেরা অ্যাথলেটকে নানা ভাবে স্মরণ করব আমরা। পেলে অমর, তার সব স্মৃতি, ইতিহাস সংরক্ষণ করা হবে।’

পেলে প্রসঙ্গে সিবিএফ প্রধান ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘প্রথমবার তাকে ১৯৬৭ সালে খেলতে দেখি। তখন আমার বয়স ১৩। সেই ম্যাচে গোল করেছিলেন পেলে। বছর দুয়েক পর সালভাদোরে গিয়েছিলাম পেলের সহস্রতম গোল দেখব বলে। কিন্তু শেষ অবধি সেই ম্যাচে তা হয়নি। তবে এর ঠিক তিন দিন পরই ভাস্কোর বিপক্ষে রিওতে ক্যারিয়ারের সহস্রতম গোলের মাইলফলকে পৌঁছান ফুটবল সম্রাট।’

পেলের জন্ম ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর। বাবার দেওয়া নাম এডসন আরান্তেস দি নাসিমেন্তো হলেও পেলে নামেই তিনি পরিচিতি পান। 

ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জয় করেন পেলে। ১৯৫৮ সালে যখন ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয় করে, তখন পেলের বয়স ছিল কেবল ১৭ বছর। এরপর ১৯৬২ এবং ১৯৭০ সালেও বিশ্বকাপ জয় করেন তিনি। তিনি ২০০০ সালে ফিফার শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।

তার একুশ বছরের ক্যারিয়ারে ১ হাজার ৩৬৩টি ম্যাচে ১ হাজার ২৮১টি গোল করেছেন। এর মধ্যে ব্রাজিলের হয়ে ৯১ ম্যাচে করেন ৭৭টি গোল।

বুইউ