কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুপচাঁচিয়ার সাহেব বাড়ি(ভিডিও)

মতিউর রহমান, দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি জুলাই ২৬, ২০২১, ০৮:২৯ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

বগুড়াঃ প্রকৃতির ছায়া ঘেরা বাড়িটিতে সুনসান নিরবতা। এক কালে লোকজনে ভরা বাড়ি আজ খালি পড়ে রয়েছে। তবে কালের পরিক্রমায় বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গুনাহারের খ্যাতিমান জমিদারের বিলাসবহুল বাড়িটি আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িটির নাম সাহেব বাড়ি। কেউ বলে খান সাহেবের বাড়ি। বাড়িটি ধ্বংস্তুপে পরিনত হতে চললেও জমিদারের কর্মযজ্ঞের কথা আজও মানুষের মুখে মুখে রয়েছে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার উত্তরে গুনাহার গ্রামের এই বাড়িটি খাঁন বাহাদুর মোতাহার হোসেন খাঁনের। খাঁন বাহাদুর মোতাহার হোসেন খাঁন ছিলেন দুই পুত্র ও পাঁচ কন্যার জনক। তিনি ব্রিটিশ সরকারের অধীনে বাংলার বিহার, উড়িষ্যার এক্সসাইজ কমিশনার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন সৌখিন জমিদার। সৌখিনতার ধারাবাহিকতায় গুনাহারের মত নিভৃত পল্লীতে ১৯৩৯ সালে  তিনি নির্মান করেন রাজ প্রাসাদতুল্য দৃষ্টিনন্দন ও বিলাসবহুল দ্বিতল ভবন।

ভবনের চারপাশ ঘিরে খনন করা হয়েছিল বিশাল নিরাপত্তা দীঘি। এ দীঘিতে জমিদার পরিবারের সদস্যরা নৌ-ভ্রমন করতেন। পাশপাশি জমিদার বাড়ির পশ্চিম পুবাংর্শে রয়েছে ঘাট বাঁধানো দর্শণীয় পুকুর। এই পুকুরে জমিদার পরিবারের সদস্যরা গোসল করত। পুকুরের পশ্চিম-দক্ষিনে উঁচু সীমানা প্রাচীর আজও ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

বাড়িটির ভিতরের সৌন্দর্যের কথা বলে শেষ করার নয়। সৌন্দর্যের কারনে বাড়িটি দেখতে ছুটে আসে অগনিত মানুষ ও পর্যটক।

১৯৫২ সালের ২ জুলাই খাঁন বাহাদুর মোতাহার হোসেন খাঁন এই জমিদার বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। তিনি জীবদ্দশায় নিজের পরিবার পরিজনদের চেয়ে প্রজাসাধারণদের সুখের কথা বেশি ভাবতেন। আর সে কারণে মৃত্যূর পরেও তাঁর কর্মযজ্ঞের স্মৃতি তাঁকে আজও মানুষের মাঝে অমর করে রেখেছে।

বর্তমানে বাড়িটি মোতাহার হোসেন খাঁন সাহেবের চতুর্থ ও পঞ্চম কন্যাদ্বয় চিরকুমারী রওশন মহল ও জৌলুশ মহলের নামে রেকর্ডভুক্ত। তারাও ওই বাড়িতে বসবাস না করে বগুড়া জেলা শহরে বসবাস করেন। এদিকে দীর্ঘকাল ধরে বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় এই বাড়িটি ধ্বংস হতে চলেছে।

স্থানীয় এলাকার শিক্ষাবিদ, জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষের দাবি, খাঁন বাহাদুর মোতাহার মোতাহার হোসেন খাঁনের কর্মযজ্ঞের স্মৃতি কে আরও স্মরণীয় করে রাখতে ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের ধারক এই বাড়িটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হোক।