বিদেশে এ্যাম্বেসীতে কি করছে ইকোনোমিক মিনিস্টাররা?

প্রভাত আহমেদ এপ্রিল ১২, ২০২১, ০৪:৪৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস রপ্তানি বাণিজ্য। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য রপ্তানি বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা বাধা। এ জন্য কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় এ বাণিজ্য হচ্ছে না। রপ্তানির বাধাগুলো দূর করতে পারলে বর্তমানের তুলনায় অনেক বেশি পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব। এ ছাড়া নতুন রপ্তানি খাতের সুযোগ সৃষ্টি এবং নতুন পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যবসায়ীদের বিদেশে নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করে তাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করতে বলেছেন, দেশের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধ করতেই এটি জরুরী।

তিনি বলেছেন, ‘আমাদের শুধু একদিকে তাকালে চলবে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নতুন দেশ, নতুন নতুন জায়গা খুঁজে বের করতে হবে, নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং সেইসব বাজারে কোন ধরনের পণ্য রপ্তানি করা যায় সেটাও খুঁজে বের করতে হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন আশার কথা বললেও কাজ হচ্ছে তার উল্টো। বিদেশে বাংলাদেশের এ্যাম্বেসীগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কমার্শিয়াল এটাসি বা ইকোনোমি মিনিস্টাররা এবিষয়ে কতটা ভাবেন?

ইকোনোমিক মিনিস্টার বা কমার্শিয়াল  এটাসিদের কাজ কি? কমার্শিয়াল এটাসিদের কাজ হলো বিদেশে ব্যবসা--বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করা, বাংলাদেশের পণ্য বিদেশের মার্কেটে পরিচয় বৃদ্ধি করা। বিদেশ থেকে বাংলাদেশে নতুন নতুন ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধি করা, বিভিন্ন দেশে দেশীয় পণ্যের মেলা বসিয়ে ও বিদেশের বাজারে তা তুলে ধরা, নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষে সরকারকে সহযোগীতা করা, কিন্তু বাস্তবে তা কতটা সফল হচ্ছে? 

এবিষয়ে জানতে রাপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সিনিয়র সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীনকে কয়েকবার ফোন করা হয় আগামী নিউজ এর পক্ষ থেকে (০১৭১৪০৫১৪০১) তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সূত্রে জানায়, বিভিন্ন এ্যাম্বেসীতে বিদেশে কর্মরত ইকোনোমিক মিনিস্টার বা কমার্শিয়াল এটাসিগণ ব্যক্তিগত ভোগবিলাস নিয়েই ব্যস্ত থাকেন, আরাম আয়েশে দেদারসে জীবন কাটাচ্ছেন বিদেশের মাটিতে। বিদেশ থেকে  কোন ধরণের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে না তাদের। বিদেশে তাদের কেন পাঠানো হয়েছে, তাদের কি কারণে নিযুক্ত করা হয়েছে তারা তা হয়তো ভুলেই গিয়েছে। 

এদিকে, বাংলাদেশের পণ্যের বাজার দখল করেছে চীন, ভারত, কোরিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের পণ্য। বাংলাদেশের ইকোনোমি মিনিস্টাররা সফল না হলেও সফল হচ্ছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশী ইকোনোমি মিনিস্টাররা, তারা প্রতিনিয়ত তাদের পণ্য দিয়ে বাংলাদেশের মার্কেট দখলে নিচ্ছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর এক কর্মকতা আগামী নিউজকে বলেন, দেশের বাইরে নিযুক্ত বিভিন্ন  দেশে বাংলাদেশের এ্যাম্বেসীতে কর্মরত ইকোনোমিক মিনিস্টাররা আসলে ব্যক্তিগত ভোগ বিলাসে ব্যাস্ত, তিনি বলেন, আপনি লক্ষ করলে দেখবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের ইকোনোমি মিনিস্টার যে পরিমাণে কাজ করে তার সিকীভাগও কাজ আমাদের দেশের ইকোনোমি মিনিস্টাররা করেন না।

তিনি আরও বলেন, চীন, কোরিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের পণ্য আমাদের দেশের বাজার দখল করে ফেলেছে, আর আমরা কি করছি? তারা প্রতিনিয়ত তাদের বিভিন্ন পণ্যের প্রচার-প্রসার বৃদ্ধিতে কি পরিমাণে তাৎপরর্য দেখায় সেটা বলে বুঝাতে পারবো না। তাদের প্রতিদিনই নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসে আমাদের বাজারে, এটা সম্ভব হচ্ছে কারণ তারা তাদের কর্মের প্রতি কমিটেড।

সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে ইকোনোমিক মিনিস্টারদের কোন চাপ প্রয়োগ করা হয় না যার কারণে তারা নিজের মতো করে চালাচ্ছে তাদের কর্মজীবন, তাদের কোন রকম কপিয়ত নিচ্ছে সরকার। 

আগামীনিউজ/প্রভাত