ভারতে ৫২০ জনের বেশি আটকে থাকাদের যে কোন সময় ফিরিয়ে আনা হবে

ম. শাফিউল আল ইমরান এপ্রিল ১, ২০২০, ১১:১৮ এএম

করোনাভাইরাস এর সংক্রমণ রোধে ভারতজুড়ে লকডাউনের কারণে দেশটিতে আটকা বা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন শত শত বাংলাদেশি। তারা চিকিৎসা, শিক্ষা, ভ্রমণসহ বিভিন্ন কারণে আটকা পড়েছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার৷ সরকারের তরফ থেকে যেকোন সময় তাদের ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি আছে।

কিন্তু ভারত থেকে যাদের ফিরিয়ে আনা হবে, তাদের লিখিত দিতে হবে যে, প্রত্যেকেই ১৪ দিনের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।

দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যারা আটকা পড়ারা বেশ অসুবিধা পড়েছেন। এদের মধ্য অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে সঙ্কটে পড়েছেন। দেশে ফেরার বিষয়ে অনিশ্চয়তা তো আছেই। এ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের ফেরানো ছাড়া বিকল্প নেই। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বেশ জোরালো প্রস্তুতি আছে।

সূত্রটি আরো জানায়, এ হাইকমিশনে ৫২০ জনের মতো যোগাযোগ করেছেন। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এদের বেশিরভাগ রোগী ও রোগীর অ্যাটেন্ড্যান্ট, শিক্ষার্থীও আছেন।

বেশিরভাগের টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। সরকার ও দূতাবাসের পক্ষ থেকে যাতে দেশ থেকে টাকা আনতে পারে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে টাকা আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা ক্রেডিট কার্ডের লিমিট তুলে দেওয়া হয়েছে। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ভারতে আটকে পড়াদের বিষয়ে জানতে চাইলে  চাইলে পররাষ্টমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন আগামীনিউজকে বলেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। যেকোন সময় তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

যারা আর্থিক সমস্যার মধ্য পড়ছেন তাদের সেভিংস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসে যারা চার্চ কার্ড ব্যাবহার করেন তাদের সেভিংস অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সুখবর যে, ইন্ডিয়ার হোটেলওয়ালারা তাদের হোটেলে বিশেষ ছাড় দিচ্ছেন। এর ফলে, যারা যে হোটেলে থাকেন সেই হোটেগুলোতে ভাড়া অনেক কমে গেছে।

ভিসার মেয়াদ অটোমেটিক বেড়ে গেছে উল্লেখ করে  মন্ত্রী বলেন, করো ভিসার মেয়াদ শেষ হলে অসুবিধা নেই, এটা অটোমেটিক বেড়ে যাবে।

এদিকে গত রোববার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এক ফেসবুক বার্তায় জানান, ভারতে চিকিৎসা নিতে যেয়ে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের একটি তালিকা করছে দিল্লি মিশন।

দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের মধ্যে এখনও যারা হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি, তাদের মিশনে দ্রুত যোগাযোগের পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী। দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে ২৪ মার্চ থেকে গোটা ভারত লকডাউন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৮১৫ জনে। করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭৭৪ জন। এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে লকডাউন ঘোষণা করে শিল্পকারখানাসহ সবকিছু বন্ধ রাখা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়াদের হাহাকারে বাতাস ভারী হয়ে চলছে।

আগামীনিউজ/ইমরান/ডলি/মিজান