‘সরকারের অন্যতম লক্ষ্য স্থানীয় সরকারকে স্বাবলম্বী করা’

‍নিউজ ডেস্ক জুলাই ১, ২০২১, ১০:৫৭ এএম

ঢাকাঃ স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী, কার্যকর ও স্বাবলম্বী করাই বর্তমান সরকারের একটি অন্যতম লক্ষ্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করার লক্ষে সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা আছে কিনা, জানতে চান সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান। প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, গণতন্ত্র ও স্থানীয় সরকারের দাবি সবসময়ই পরস্পরকে গতিময় করেছে। গণতান্ত্রিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে একটি স্থানীয় সংস্থার প্রতিনিধি জনগণের স্বার্থকে তুলে ধরতে পারে। বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে, সংবিধানের আলোকে সব অঞ্চলে গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করা আবশ্যক।

একই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের ৩-৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদসহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা উন্নত ও প্রসারিত করতে সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন স্থানীয় সরকারের ৫টি স্তরকে (ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন) আরো শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করে অধিক কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিবিড় ভূমিকা পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনগুলো যুগোপযোগী করে সংশোধনের প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে।

সংসদ নেতা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকারের অন্যতম প্রধান ও ভিত্তি স্তর। ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী, স্বাবলম্বী, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও নারীর ক্ষমতায়নসহ মানুষের জীবনযাত্রার সার্বিক মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেমন: ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাধারণ জনগণকে সবধরণের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে একটি ছাতা পরিষেবা প্রদান ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার চালুসহ জুলাই ২০১১ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত মেয়াদে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) চলমান রয়েছে। যার মাধ্যমে ১ম পর্যায়ে ২ হাজার ৪০৭টি, ২য় পর্যায়ে ৮৮৭ টি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং বর্তমানে ১৪৪টি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন আরো আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ প্রকল্প (৩য় পর্যায়) চলমান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তৃণমূলের জনগণের কাঙ্খিত সেবার মান বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএসপি-৩) বাস্তবায়িত হচ্ছে। পল্লী এলাকার দরিদ্র ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং নারীরা যাতে দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে বিচারের সুফল পেতে পারে সে লক্ষ্যে ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে বর্তমানে দেশের ২৭টি জেলার ১৩৫টি উপজেলার ১ হাজার ৮০টি ইউনিয়নে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।