চোর ধরছি বলে চোর হয়ে যাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক জুলাই ৯, ২০২০, ০২:৪২ পিএম
ফাইল ছবি

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর কে কোন দলের, সেটা বড় কথা নয়। দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িত যাকেই আমরা পাচ্ছি, যেখানেই পাচ্ছি, আমরা ধরছি। আবার চোর ধরছি বলে চোর হয়ে যাচ্ছি। আমরাই ধরি, আবার আমাদেরকেই দোষারোপ করা হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের অনুপস্থিতে উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র নষ্ট করে দিয়ে গেছে ১৯৭৫-এর পর যারা রাতের অন্ধকারে অস্ত্র হাতে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারাই। হ্যাঁ, কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, সে ক্ষমতা কুক্ষিগত করবার জন্য এরা মানুষকে দুর্নীতি শিখিয়েছে, কালো টাকা শিখিয়েছে, ঋণ খেলাপি শিখিয়েছে।’

সংসদ নেতা আরও বলেন, ‘তারা সমাজকে কলুষিত করে দিয়ে গেছে। মানুষ যে একটা আদর্শ নিয়ে চলত, নীতি নিয়ে চলত। দীর্ঘদিন মিলিটারি ডিকটেটরশিপ এ দেশের মানুষের চরিত্র হনন করেছে। কারণ তাদের অবৈধ ক্ষমতাটাকে নিষ্কন্টক করা- এটাই ছিল তাদের লক্ষ্য। সেখানে এভাবে বছরের পর বছর দুর্নীতির বীজটা বপন করেছে। এটা এখন মহিরুহ হয়ে গেছে। আপনি যতই কাটুন, আবার কোথা থেকে যেন গজিয়ে ওঠে। কারণ, মানুষের চরিত্রটাই নষ্ট করে দিয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে এ চরিত্রহীনতা একেবারে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছিল। সেখানে থেকে যতই চেষ্টা করেন, এর মূলোৎপাটন যথেষ্ট কঠিন।’

করোনা মোকাবিলা করা ডাক্তার-নার্সদের সুযোগ সুবিধা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডাক্তার-নার্স নিয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে যথেষ্ট বেড এবং সব রকম সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাক্তার-নার্স যারা কাজ করছে এবং টেকনিশিয়ানদের তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে রাখার জন্য হোটেল ভাড়া করে থাকা-খাওয়া সব দিয়ে রাখা হচ্ছে। সেখানে খরচ তো হবেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও এর মধ্যে যে খবরগুলো পাচ্ছেন বলছেন, এটা কারা করছে? এর আগে তো দুর্নীতিটাই নীতি ছিল। অনিয়মটাই নিয়ম ছিল, অনিয়মটাই নিয়ম ছিল। সেভাবেই রাষ্ট্র চলেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আসার পর, আওয়ামী লীগ আসার পর, সেগুলো মোকাবিলার করার চেষ্টা করছি। যতটুক পারি সেগুলো শুদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আগেই বলেছি, আমরা এ অনিয়মগুলো নিশ্চয়ই মানব না। যেই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেব। এটা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, আমরা দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। দুর্ভাগ্য, করোনাভাইরাস সবকিছু স্থবির করে দিয়েছে। এটা অত্যন্ত কষ্টকর ও দুঃখজনক। তবে আমরা চেষ্টা করেছি যতদূর সম্ভব মানুষকে রক্ষা করা এবং মৃত্যুহার কমানোর। সেদিকে লক্ষ রেখে আমরা পরিকল্পনা করেছি, পদক্ষেপ নিয়েছি। তার সুফল মানুষ পাচ্ছে। দেশের মানুষ আরও সচেতন হলে, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মেনে চললে করোনা মোকাবিলায় আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যেতো।

তিনি আরও বলেন, ঘরে বসে বাজেটের সমালোচনা অনেকেই করতে পারে। কিন্তু মাঠে গিয়ে কাজ করার মতো কয়জন আছে? বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক যারা তারাই শুধু এই কাজ করে। তারাই শুধু মাঠে গিয়ে কাজ করে।

আগামীনিউজ/এমজামান