মানব শরীরে নিষিদ্ধ ড্রাগের মতো মোবাইলের নেশা

নিউজ ডেস্ক জুন ২৬, ২০২০, ০৯:৫৯ পিএম
ফাইল ছবি

বাসে ট্রামে একটা লেখা প্রায়ই দেখা যায়, ‘‌গোপনে নেশা ছাড়ান’‌‌। আর ক’‌দিন বাদে যদি দেখেন লেখা আছে ‘‌গোপনে মোবাইলের নেশা ছাড়ান’‌, অবাক হবেন?‌ হবেন না প্লিজ। কারণ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মোবাইলের নেশা আসলে বেশ কিছু নিষিদ্ধ নেশার ওষুধের মতোই কাজ করে আমাদের শরীরে, মস্তিষ্কে।বুদ্ধ্যাঙ্ক বা ‘‌আইকিউ লেভেল’‌ নিয়ে কম বেশি কথা সকলেই বলি। সেই ‘‌আইকিউ লেভেল’‌–এ সরাসরি প্রভাব ফেলে এই মোবাইলের ব্যবহার। মোবাইলের আলোর জন্য আমাদের মস্তিষ্কের ধূসর থকথকে পদার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই সমস্যা আরও ভয়ঙ্করভাবে দেখা দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে। সকালে চোখ খোলা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া অবধি বারবার আমরা এই যন্ত্রের দিকে মন দিই। রাস্তায় চলতে চলতে, কারও সঙ্গে কথা বলছি মুখোমুখি, খেতে বসে, টয়লেটে গিয়ে–‌কোনও সময়েই এই যন্ত্রটিকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারি না। মুঠোফোনে বিভোর আমরা। 

গবেষণা করার সময়ে হেইডলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জার্মান গবেষক মোট ৪৮ জনের মস্তিষ্কের এমআরআই রিপোর্ট দেখেন। তাঁদের মধ্যে ২২ জন মোবাইল ফোনে আসক্ত ছিলেন। দেখা গিয়েছে, তাঁদের মস্তিষ্কের ধূসর থকথকে পদার্থের ঘনত্বে প্রভাব পড়েছে। সেই প্রভাব এতটাই যে, ওই ২২ জনের দৃষ্টিশক্তি, কথা বলা, আবেগ সবকিছুরই ক্ষমতা বাকিদের চেয়ে কমে গেছে। 

বেশ কিছু মোবাইল কেনার সময়েই দেখবেন, তাতে ‘‌ইনবিল্ট’‌ কিছু ‘‌ফিচার’‌ থাকে, তাতে সারাদিনে কতটা ব্যবহার করলেন ফোনটি, সেটার হিসেব রাখতে পারবেন। চেষ্টা করাই যায় সেটার দিকে নজর রেখে ব্যবহারের সময়টা কমিয়ে দিতে।‘‌সোশ্যাল মিডিয়া’‌–র ‘‌অ্যাপগুলো’‌–র বদলে কিছু সুস্থ অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলতে পারেন। ফলে নিজেকে ফিট রাখলে, রোজ হাঁটলে বা ক্যালোরি ঝরালে আপনারই ভালো লাগবে। শুধু ঘাড় গুঁজে বসে বসে মোবাইল ঘাঁটবেন না সেক্ষেত্রে আর।ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিতে পারেন। খুবই কষ্ট হয়তো হবে প্রথম দিকে। কিন্তু খুব একটা সমস্যা হবে আর পরের দিকে। ফোনের আলো বা ‘‌ব্রাইটনেস’‌ কমিয়ে দিতে পারেন। তাহলে আর অত বেশিবার ফোনের দিকে চোখ যাবে না। আপনার নেশা কাটাতে সুবিধাই হবে।

আগামীনিউজ/জেএস