বিচারপতি নিয়োগে আইন করা অপরিহার্য: প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৫, ২০২১, ০৩:৩৮ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা বাস্তবতার নিরিখে অপরিহার্য। এতে বিচারপতি নিয়োগের কাজটি আরও স্বচ্ছ ও দ্রুততর হবে এবং জনগণের মধ্যে নিয়োগের স্বচ্ছতা সম্পর্কে ভিত্তিহীন ধারণা দূরীভূত হবে।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া বিদায়ী সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি (আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ) অঙ্গের দায়িত্ব এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য স্পষ্টভাবে বিধৃত রয়েছে। তিনটি অঙ্গের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কই গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এটা আমাদের সংবিধানের সৌন্দর্য।

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস হলো জনগণের আস্থা। এটা হলো বিচারকদের সততা, সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতার প্রতি গণমানুষের অবিচল বিশ্বাস। সাধারণ মানুষের এই আস্থা অর্জনের জন্য বিচারকদের একদিকে যেমন উঁচু নৈতিক মূল্যবোধ ও চরিত্রের অধিকারী হতে হবে, তেমনই সদা বিকাশমান ও পরিবর্তনশীল আইন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও সামাজিক মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এটা অর্জন সম্ভব কেবলমাত্র নিয়মিত অধ্যয়ন ও সময়মতো আইনানুগভাবে বিচারিক কাজ সম্পন্নকরণের মাধ্যমে।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে, মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আমাদের বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। মামলার জট নিরসনে দেশের অধস্তন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। জেনে খুশি হয়েছি যে, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে যাচ্ছেন ৩১ ডিসেম্বর।  ১৯ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিমকোর্টে শুরু হচ্ছে অবকাশ। ফলে অবকাশে বসবে না আপিল বিভাগ। তাই দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আজ শেষ বিচারিক কর্মদিবস পালন করলেন তিনি।

এদিকে অবমূল্যায়নের অভিযোগ এনে প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী অংশ।  সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন।

উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে যাচ্ছেন আগামী ৩১ ডিসেম্বর। তবে ১৯ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হচ্ছে অবকাশ। আর অবকাশে বসবেন না আপিল বিভাগ। এছাড়া ১৬–১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি ছুটি। তাই প্রধান বিচারপতি হিসেবে আজ বুধবারই শেষ কর্মদিবস বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের।

রীতি অনুযায়ী শেষ কর্মদিবসে প্রধান বিচারপতিকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।

আগামীনিউজ/বুরহান