‘লীলা নাগ’ হচ্ছেন আফসানা মিমি

‍‍`প্রীতিলতা‍‍` সিনেমায় কবীর সুমনের গান

ডেস্ক রিপোর্ট অক্টোবর ৭, ২০২০, ১১:৩৮ এএম
ছবি সংগৃহীত

ঢাকাঃ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী শহীদ প্রীতিলতার জন্য গাইবেন বাংলা গানের জীবনমুখী ঘরানার কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। গোলাম রাব্বানীর চিত্রনাট্য ও সংলাপে রাশিদ পলাশের পরিচালনায় নির্মিতব্য 'প্রীতিলতা' সিনেমার জন্য 'একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি/ হাসি হাসি পরবো ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী'- গানটি কণ্ঠে তুলবেন তিনি।

এই গানটির মূল শিল্পী লতা মুঙ্গেশকর। তার কণ্ঠে ১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'সুভাষচন্দ্র' সিনেমায় এই গানটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। ভারতের বাঁকুড়ার লোককবি পীতাম্বর দাস গানটির রচনা ও সুর করেন। তবে কেউ কেউ মনে করেন গানটি মুকুন্দ দাসের। এবার নতুন করে গানটি প্রথমবার গাইবেন কবীর সুমন।  

এ প্রসঙ্গে এক ভিডিওবার্তায় কবীর সুমন বলেন, কিছু দিন আগে বাংলাদেশ থেকে রাশিদ পলাশ আমাকে ফোন করেন এবং জানান যে তারা কয়েকজন মিলে শহীদ প্রীতিলতাকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন। আমাকে একটি গান করতে বলেন। আমি প্রীতিলতার জন্য গানটি স্বকণ্ঠে গেয়ে দেবো। আমাকে এই গানটির জন্য স্মরণ করায় গর্ববোধ করছি।  

তিনি আরও জানান, টিম প্রীতিলতা নামে যে সংগঠনটি এই সিনেমাটি করছে, তিনি এখন থেকে তাদের দলের একজন সদস্য। এছাড়া প্রাণখুলে সিনেমাটির সার্থকতা কামনা করেন এই গুণী শিল্পী।

সিনেমাটির চিত্রনাট্যকার গোলাম রাব্বানী  বলেন, প্রীতিলতার জন্য কবীর সুমন যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এটা বড় ধরনের অনুপ্রেরণা আমাদের জন্য। কবীর সুমন প্রীতিলতাকে অন্তরে ধারণ করেন। এই গান কবীর সুমন ছাড়া অন্য কাউকে দিয়ে গাওয়ানোর চিন্তাই আমি করতে পারিনি।

https://www.facebook.com/watch/?v=4693699097307705

সিনেমাটিতে প্রীতিলতার চরিত্রে অভিনয় করছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এর কসটিউম ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন বিবি রাসেল। ইউফরসির ব্যানারে আগামী ১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় সিনেমাটির শুটিং শুরু হবার কথা রয়েছে।  

এবার জানা গেল, সিনেমাটির ‘লীলা নাগ’ চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও পরিচালক আফসানা মিমি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিনেমাটির পরিচালক রাশিদ পলাশ।

রাশিদ পলাশ বলেন, “সিনেমারটির ‘লীলা নাগ’ চরিত্রের জন্য আমারা এমন একজনকে খুঁজছিলাম, যার সঙ্গে চরিত্রে শতভাগ যায়। এরপর আমাদের মাথায় মিমি আপার নাম আসে। সম্প্রতি আমরা মিমি আপার সঙ্গে বসেছিলাম। তিনি মৌখিকভাবে সিনেমাটিতে কাজ করার জন্য ডেট দিয়েছেন। এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে আমরা কাগজপত্রের যে অংশটা বাকি আছে, সেটি সেরে ফেলব।”

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার বিপ্লবী জীবনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ঢাকায় শ্রীসংঘের ‘দীপালী সংঘ’ নামে একটি নারী শাখায়। লীলা নাগের (বিয়ের পর লীলা রায়) নেতৃত্বে এই সংগঠনটি নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য কাজ করত। গোপনে তারা মেয়েদের বিপ্লবী সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করার কাজও করত। ইডেন কলেজের শিক্ষক নীলিমাদির মাধ্যমে লীলা রায়ের সঙ্গে প্রীতিলতার পরিচয় হয়েছিল। তাঁদের অনুপ্রেরণায় দীপালী সংঘে যোগ দিয়ে প্রীতিলতা লাঠিখেলা, ছোরাখেলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

‘প্রীতিলতা’ সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন গোলাম রাব্বানী। নভেম্বরে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কলকাতায় ছবিটির শুটিংয়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে সিনেমাটির।

১৯১১ সালের (০৫ মে) চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন প্রীতিলতা। তিনি ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণশেষে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়ার আগে সঙ্গে রাখা পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মাত্র ২১ বছর বয়সে আত্মাহুতি দেন।

আগামীনিউজ/জেহিন